বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য কেনা ৩টি ভারী চিকিৎসা সরঞ্জাম রোগীদের কোন উপকারে আসছে না। এর মধ্যে এমআরআই এবং কোবাল্ট-৬০ নামে দুটি চিকিৎসা সরঞ্জাম মাসের পর পর মাস বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। ওই দুটি সরঞ্জামের বিকল্প হিসাবে ভেকি থেরাপি নামে অপর একটি সরঞ্জাম ২ মাস আগে ক্রয় করা হলেও এখন পর্যন্ত ভেকি থেরাপি স্থাপন করা হয়নি। ফলে প্রতিদিন শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ২৫-৩০ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছেন।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এমআরআই এবং কোবাল্ট-৬০ নামে চিকিৎসা সরঞ্জাম দুটি মেরামতের জন্য যে পরিমা অর্থ প্রয়োজন তা সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতাল স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ওই দুটি মেশিনের বিকল্প হিসেবে ভেকি থেরাপি মেশিন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়। দুই মাস আগে মেশিনটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। সেটি জরুরীভাবে স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বারবার চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রায় ৬ কোটি টাকা মূল্যের এমআরআই নামের চিকিৎসা সরঞ্জাম স্থাপন করা হয় ২০০৬ সালে। স্থাপনের পর থেকে ভারী যন্ত্রটি বার বার বিকল হতে থাকে। প্রতিবারই স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীরা এসে এমআরআই যন্ত্রটি আবার সচল করে দিয়ে যান। সর্বশেষ দুই মাস আগে এমআরআই মেশিনটি বিকল হওযার পর প্রকৌশলীরা সেটি সচল করতে ব্যর্থ হন। একইভাবে কোবাল্ট-৬০ নামে চিকিৎসা সরঞ্জাম বিকল এক বছর ধরে।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্র প্রকৌশলীদের বরাত দিয়ে জানান, ওই দুটি চিকিৎসা সরঞ্জাম মেরামতের জন্য কয়েক লাখ টাকার প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ওই পরিমাণ টাকা বরাদ্দ পাওয়া অনিশ্চিত হওয়ায় এমআরআই এবং কোবাল্ট-৬০ নামে মেশিন দুটি পুনরায় চালু হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পরে হাসপাতাল স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন কমিটির সভায় বিকল দুটি মেশিন মেরামতে অর্থ ব্যয় না করে ভেকি থেরাপী নামে চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়। দুই মাস আগে ভেকি থেরাপি চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় করা হলেও এখন পর্যন্ত সেটি বাক্সবন্দী অবস্থায় একটি কক্ষে পড়ে আছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, শেবাচিম হাসপাতাল ছাড়া বরিশালের কোন ক্লিনিকেও ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার উন্নত সরঞ্জাম নেই। হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো অচল থাকায় ক্যান্সার রোগীদের ঢাকায় যেতে হচ্ছে। এমআরআই মেশিনের চিকিৎসা ফি শেবাচিম হাসপাতালে ৫ হাজার টাকা নির্ধারিত হলেও ঢাকায় ২০ হাজার টাকা ফি দিয়ে ওই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে দরিদ্র রোগীদের।
বিডি-প্রতিদিন/১১ জানুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব