২৪ নভেম্বর। এ দিন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। সাধারণত সাফল্য কিংবা বেদনার সংবাদই পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের শিরোনাম হয়ে থাকে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এ দিন প্রাণের শহর ঢাকা গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল দুঃখজনক সংবাদ উপাদানের ওপর ভিত্তি করে। বৈশ্বিকভাবে বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্যানুযায়ী, সেদিন ঢাকা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দুষিত বায়ুর শহর।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২৪ নভেম্বর সকাল ৭টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বেশির ভাগ সময় ঢাকাই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দুষিত বায়ুর শহর। এরপর কয়েক ঘণ্টার জন্য মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোর ও ভারতের কলকাতা শহর দুষণের দিক থেকে ঢাকাকে ছাড়িয়ে যায়। তবে রাত সাড়ে ৮টার পর ঢাকা আবার শীর্ষে চলে আসে।
পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি বায়ুদুষণ। অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাঙ্গনের বায়ু দুষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় সাত মিলিয়ন মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। বাতাসে ভারী ধাতু ও সূক্ষ্ম বস্তুকণা বেড়ে গেলে ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, স্নায়ুজনিত সমস্যা বেড়ে যায়, বুদ্ধিমত্তা কমে যায়।
আমরা সকলেই মনে করি, অভ্যন্তরীণ বাতাসের চেয়ে বাহিরের বাতাস বেশি বিষাক্ত, আসলে কি তাই? গবেষকরা বলছেন আসল চিত্র তেমন নয়। গবেষণা বলছে, অভ্যন্তরীণ কক্ষের অর্থাৎ সাধারণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের বায়ু দুষণের পরিমাণ বহিরাঙ্গনের বায়ু দুষণের চেয়ে ২-৫ গুণ বেশি এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে উন্মুক্ত স্থানের বাতাসের চেয়ে তা ১০০ গুণ বেশি হয়ে থাকে।
ঘরদোর পরিষ্কার, নির্মাণাধীন বিভিন্ন স্থাপনার ধুলিকণা, রান্নার কাজে ব্যবহৃত জ্বালানি এবং প্রযুক্তি, তাপ উৎপাদনকারী বিভিন্ন সামগ্রী, আলোর বিভিন্ন ধরনের উৎস অভ্যন্তরীণ বায়ু দুষণের অন্যতম কারণ।
দেশে শীতের আমেজ বইছে। শীতের কবল থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে এ সময় খুব স্বাভাবিকভাবেই আমরা ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখি। এ কারণে ঠাণ্ডা বাতাস আমাদের ঘরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে না, যা অভ্যন্তরীণ বাতাসের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অভ্যন্তরীণ দুষিত বায়ু ঘর থেকে বেরুতে না পারলে তা আরও ক্ষতিকর রূপ ধারণ করে। এর ফলে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক এবং ধূলিকণা খুব সহজেই যে কাউকে আক্রান্ত করতে পারে, যদি না তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।
ব্যাক্টেরিয়াজনিত অসুখ থেকে বাঁচতে ঘরে লাগানো যেতে এয়ার পিউরিফায়ার। বাজারে অনেক রকমের এয়ার পিউরিফায়ার রয়েছে কিন্তু অভ্যন্তরীণ বায়ু দুষণ থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন ভালো মানের এয়ার পিউরিফায়ার। অভ্যন্তরীণ বায়ু দুষণ হ্রাস এবং সুস্বাস্থ্যের লক্ষ্যে স্যামসাংয়ের তিনটি মডেলের অত্যাধুনিক এয়ার পিউরিফায়ার দারুণ সমাধান হতে পারে। বায়ুতে ভেসে বেড়ানো অ্যালার্জির জীবাণু দূর করে স্বস্তিদায়ক বিশুদ্ধ বাতাস নিশ্চিত করে এই পিউরিফায়ারগুলো।
পাঁচ মাত্রার পরিশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত অ্যালার্জেন, বড় ধূলিকণা, ক্ষতিকারক গ্যাস, অতি ক্ষুদ্র ধূলিকণা এবং জীবাণু শোধনের ক্ষমতা আছে এগুলোতে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুষণের মাত্রা সনাক্ত করে শুদ্ধ বায়ু নিশ্চিত করতে নিজস্ব কার্যকরণ মাত্রা নির্ধারণ করে এবং নিঃশব্দে কাজ সম্পন্ন করে যেন ব্যবহারকারীদের কোন অসুবিধা না হয়।
তুলনামূলক অল্প বিদ্যুৎ কাজে লাগিয়ে কাজ করতে সক্ষম এয়ার পিউরিফায়ারগুলো। সর্বোচ্চ ১০০০ স্কয়ার ফিট এবং সর্বনিম্ন ৪২০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত ঘরের বাতাস দুষণমুক্ত করার ক্ষমতা সম্পন্ন এয়ার পিউরিফায়ারগুলোর ওজনও বেশ কম এবং সহজে অপারেট করা যায়।
এছাড়া উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সেন্সর থাকায় খুব সহজেই ধুলা ও গ্যাসসহ পিএম২.৫ মাইক্রোমিটারের মত অতি ক্ষুদ্র জীবাণু সনাক্ত করে পরিষ্কার করতে পারে এগুলো। পাশাপাশি এয়ার পিউরিটি ডিসপ্লের কারণে ব্যবহারকারী ঘরের অভ্যন্তরে বাতাসের মান সম্পর্কে জানতে পারেন।
বহিরাঙ্গনের বায়ুদুষণ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা প্রায় অসম্ভব। তবে আমরা চাইলেই অভ্যন্তরীণ দুষণের ঝুঁকি কমাতে পারব। যেহেতু আমরা দিনের বড় একটি সময় ঘরের ভেতরে পার করি, সেক্ষত্রে নিজের ও পরিবারের সুস্থ্যতার জন্য অভ্যন্তরীণ বায়ু দুষণের ঝুঁকি যতটা সম্ভব কমানো উচিত। এজন্য সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াটা জরুরি। একটি সঠিক পদক্ষেপ নানা রোগ থেকে নিজেদের রক্ষার মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে সাহায্য করবে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম