খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপনকে সামনে রেখে পাহাড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে খ্রিস্ট সম্প্রদায়ভুক্ত বম, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চঙ্গ্যারা এ উৎসবের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। গির্জায় গির্জায় সাজানো হয়েছে আলোকসজ্জা। জেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গ্রামগুলো লাল নীল বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে। এছাড়া ক্রিসমাস ট্রি, ধর্মীয় প্রার্থনা, বাইবেল পাঠ, যিশুর জন্মের সে গোশালাও তৈরি করা হয়েছে। গির্জাগুলোতে সাজানো হয়েছে নানা সাজে। আর ঘরের উপরে টাঙানো হয়েছে রঙিন কাগজে বানানো তারা চিহ্নিত আলোক সজ্জা। বসতবাড়ির আঙ্গিনায়ও দেখা গেছে নানা রঙের কারুকাজ। এছাড়া শহরের তবলছড়ি বন্ধু যিশু টিলা গির্জায় দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সঙ্গে এ উৎসবে মেতে উঠেছে বাঙালিরাও। রবিবার রাত ১২টা ১মিনিটে কেক কেটে রাঙামাটিতে উৎসবের সূচনা করবে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির ১০টি উপজেলার বিভিন্ন খ্রিস্টান পল্লীতে এ উৎসব পালন করা হবে। এর মধ্যে বিলাইছড়ির, নানিয়ারচর উপজেলার বেতছড়ি চাকমা খ্রিষ্টানপাড়া ও পুরানপাড়া, রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি, নতুনবস্তি, বন্ধু যীশুটিলা, রির্জাভ, কাপ্তাই উপজেলা, আনন্দো বিহার এলাকা, লুসাই পাহাড়, বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের উজানছড়ি, বেটলিং, কংলাক, লুইলুই, উল্ডলংকর গির্জাগুলোতে বড়দিন উপলক্ষে দিনব্যাপী ধর্মীয় উৎসব উদযাপিত হওয়ার কথা রয়েছে। আবার কেউ কেউ এলাকায় আয়োজন করেছে প্রীতিভোজের।
অন্যদিকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের শুভ বড়দিন উপলক্ষে রাঙামাটি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। খ্রিস্টান পল্লীগুলোর আশে-পাশে পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
রাঙামাটি সাধু যোসেফ ধর্মপল্লী পাল পুরোহিত ফাদার সিলভানুস হেম্রম জানান, ''ঈশ্বরের আশীর্বাদরূপে যিশু এসেছিলেন মানবতার কল্যাণে মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখাতে। পাহাড়ে শান্তির বার্তা নিয়ে আসবে প্রভু যীশুর জন্মদিন। বিপুল আনন্দ, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় জেলা শহরসহ রাঙামাটির বিভিন্ন গির্জায় বড়দিন উদযাপিত হবে। এ উৎসবের মধ্যে মিশে যাবে সকল হিংসা, সংঘাত। সৃষ্টি হবে সম্প্রীতি মেলবন্ধন।''
এ ব্যাপারে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া বলেন, ''খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী যাতে আনন্দ উল্লাসে বড়দিন পালন করতে পারে সেজন্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধির পাশাপাশি পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে শান্তিতে বাস করতে পারে প্রভু যীশুর জন্মদিনে এ প্রার্থনা করছি।''
বিডি-প্রতিদিন/২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭/মাহবুব