বঙ্গোপসাগরে মাছ না পেয়ে খালি হাতে ফিরেছেন কুতুবদিয়ার জেলেরা। গত নিষেধাজ্ঞার পর থেকে এ পর্যন্ত জলদস্যুদের আধিপত্য ও সাগরে মাছ শূন্যতায় জেলেরা এবার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ফিরেছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে ৫৮ দিনের জন্য সরকার আবারও মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এতে বিগত দিনের ঋণের বোঝা ও নিষেধাজ্ঞার দিনগুলোতে সংসারের ব্যয় নিয়ে চিন্তিত কুতুবদিয়ার জেলেরা। তবে, ভারতের সঙ্গে মিল রেখে প্রথম বারের মতো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় জেলেরা খুশি হলেও সরকারি সহয়তা না পাওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কুতুবদিয়ার ৬টি ইউনিয়নের ছোট-বড় প্রায় ৬০০টি শুঁটকি মহল রয়েছে। এতে ১০ হাজার শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে। তাদের জন্য সরকারি ভাবে কোন সহযোগিতা নেই। এছাড়াও দ্বীপে প্রায় ১ হাজার ৫০০টি মাছ ধরার ছোট-বড় নৌকা রয়েছে। এতে প্রায় ৩৫ হাজার জেলে নিয়মিত সাগরে মাছ শিকারে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। এরমধ্যে মাত্র ১০ হাজার ৯শ ৫৯ জন সরকারি সহায়তা পেয়ে থাকলেও আরো প্রায় ৩৪ হাজারো বেশি জেলে এ সহয়তা পায় না। আর সাগরে ৪শ ৭৫ প্রজাতির মাছ ছিল। এখন রয়েছে ৩শ প্রজাতির মাছ। আরও ১শ ৭৫ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত বা স্থান পরিবর্তন করেছে। এদিকে, প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার বদলে ভারতের সঙ্গে মিল রেখে ১৪ এপ্রিল মধ্য রাত থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। অবরোধের সময়সীমা কমিয়ে পুনর্বিন্যাস করায় খুশি সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের গিয়াস উদ্দিন, হোছাইনসহ অনেকেই বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, প্রকৃত জেলে হয়েও তারা সরকারি কোন সহায়তা পায় না। সরকারের দেয়া এ অবরোধের সময়ে একদিকে ঋণের বোঝা, অপরদিকে সংসারের খরচ মেটাতে চিন্তিত তারা। উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের শাহজাহান, আব্দুল মালেক, সাবেরসহ অনেকেই জানান, জেলেদের দ্বৈতপেশা না থাকায় বেশি করে সরকারি সহায়তা দেয়া উচিত। যারা পায় তাদেরকেও সঠিক সময়ে দেয়া হয় না। এছাড়াও সকল ঋণদাতা এনজিও বা সমিতিকে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা সময়ে কিস্তি বন্ধ রাখার দাবি জানান জেলেরা।
উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, কুতুবদিয়ায় নিবন্ধিত ১০ হাজার ৯শ ৫৯ জন জেলেকে সরকারি সহায়তা দেয়া হবে। এতে অনিবন্ধিত জেলেরা এ সহায়তা পাবে না। তিনি আরও জানান, সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা সময়ে ঋণদাতা এনজিও বা সমিতির সপ্তাহিক কিস্তি সংগ্রহ বন্ধ রাখার জন্য মৎস্য অধিদপ্ত থেকে এরকম কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল