২০০৬ সাল থেকে ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক হয়ে আছেন শাকিব খান। শুধু শীর্ষ নায়কই নন, চলচ্চিত্রকারদের মতে একমাত্র নায়ক তিনি। কারণ শাকিবের পর অনেক নায়ক এসেছেন। কিন্তু কেউই দর্শক আস্থা অর্জন করতে পারেননি বা শাকিবের পর্যায়ে যেতে পারছেন না এখনো। তবে চলচ্চিত্রকারদের কথায় বর্তমানে আরিফিন শুভ এবং বাপ্পী নায়ক হিসেবে কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার করতে পেরেছেন। তাদের ছবি দর্শক দেখছে। তাহলে শাকিবের পর কে? শুভ নাকি বাপ্পী? দর্শক ও নির্মাতারা এখন এই হিসাব কষতেই ব্যস্ত। শাকিব চলচ্চিত্রে এসেছেন ১৯৯৬ সালে। তবে লাইম লাইটে আসেন ২০০৬ সালে 'কোটি টাকার কাবিন' ছবিটি দিয়ে। সেই থেকে ঢালিউডে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রয়েছে তার। ২০০৮ সালে নায়ক মান্নার অকাল মৃত্যু ও রিয়াজ অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়লে শাকিবকে একাই নায়কের ভার বহন করতে হয়। প্রায় ১০ বছর ধরে ঢালিউডের নায়কের হাল ধরে আছেন তিনি। চলচ্চিত্রকারদের কথায় এ সময়ের মধ্যে অনেকেই নায়ক হয়ে এসেছেন। কিন্তু দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পাননি কেউ।
এই 'অনেক' নায়কের ভিড়ে মাত্র দুজনের মধ্যে কিছুটা হলেও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে চলচ্চিত্রকারদের মন্তব্য। এরা হলেন আরিফিন শুভ ও বাপ্পী। আরিফিন শুভ বড় পর্দায় আসেন ২০১০ সালে খিজির হায়াত খানের 'জাগো' ছবির মাধ্যমে। ছোট পর্দায় অভিনয়ের কারণে দর্শকদের কাছে আগেই পরিচিত ছিলেন শুভ। নাটকে তার একটি নির্দিষ্ট দর্শক শ্রেণিও রয়েছে। তাই বড় পর্দায় তাকে পেয়ে বিশেষ করে মহিলা দর্শকরা তার ছবি দেখতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এর প্রমাণ 'পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী', 'ভালোবাসা জিন্দাবাদ', 'অগ্নি', 'তারকাঁটা', 'ছুঁয়ে দিলে মন', 'কিস্তিমাত' ও 'ওয়ার্নিং' ছবির সাফল্য। চলচ্চিত্র নির্মাতা সাফিউদ্দীন সাফি বলেন, শুভর মধ্যে অভিনয়ের প্রতি সিনসিয়ারিটি আছে। সব ধরনের চরিত্রে সাবলীলভাবে অভিনয় করার ক্ষমতা এরই মধ্যে দেখিয়েছেন তিনি। অন্য নির্মাতাদেরও একই কথা, অল্প সময়ে ঢালিউডে স্বতন্ত্র অবস্থান করে নিয়েছেন এই নায়ক। উচ্চতা, অভিনয় দক্ষতা, নাচ এবং অ্যাকশন ক্ষমতা সবই রয়েছে শুভর মধ্যে। তাই শাকিবের পরের আসনটি আরিফিন শুভরই প্রাপ্য।
অন্যদিকে বাপ্পী চলচ্চিত্রে আসেন ২০১২ সালে শাহীন সুমন নির্মিত 'ভালোবাসার রঙ' ছবি দিয়ে। এ পর্যন্ত তার অভিনীত ১৪টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে হিটের তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র পাঁচটি ছবি। এগুলো হলো- 'ভালোবাসার রঙ', 'অন্যরকম ভালোবাসা', 'হানিমুন', 'আই ডোন্ট কেয়ার' এবং 'অনেক সাধের ময়না'। বাকি নয়টি বঙ্ অফিসে সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। তা ছাড়া নির্দিষ্ট একটি প্রযোজনা সংস্থার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসা বাপ্পীর বেশির ভাগ ছবিই ওই সংস্থার নির্মিত। মানে নির্দিষ্ট একটি ঘরের নায়ক তিনি এবং ওই ঘরটি তাকে শাকিবের স্থান দখলে এনে দিতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
চলচ্চিত্রকারদের কথায় এতে প্রমাণ হয় জনপ্রিয়তার দৌড়ে বাপ্পীর চেয়ে শুভ অনেক এগিয়ে আছেন। কারণ শুভ অভিনীত ছবি মুক্তি পেয়েছে মাত্র আটটি। এর মধ্যে আবার 'পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী' ছবিতে অ্যান্টি হিরোর রোল করেছেন তিনি। সবই দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। শিগগিরই মুক্তি পাবে তার 'মুসাফির' ছবিটি। ইতিমধ্যে এ ছবির ট্রেলার দর্শক মনে আগ্রহের ঝড় তুলেছে। ফলে শাকিব খানের পরের আসনে আসীন হতে চলেছেন শুভ। চলচ্চিত্রকারদের কথায় এখনই এটি ফাইনাল হিসাব নয়। শাকিবের পরে কে? তা জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে সবাইকে। কারণ শুভ-বাপ্পীর পথচলা তো কেবল শুরু হলো।