আপনাদের অনেকের ফেরদৌসী বেগম ও তার ৪ শিশু সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যার কথা হয়তো মনে আছে। সিলেটগামী সুরমা মেইলের নিচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করছিলেন। নিরাপরাধ ফেরদৌসীকে গ্রাম্য সালিশে দুশ্চরিত্রা আখ্যা দিয়ে কান ধরে উঠবস করতে বলা হয়েছিল।
তার স্বামী প্রবাসী জিলন মিয়ার অনুপস্থিতিতে শত শত মানুষের সামনে এই অপমান তিনি মেনে নিতে পারেননি। তিনি রায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সাথে সাথে তাকে সমাজচ্যুত করা হয়। সেদিন রাতেই ৩টার সময় ফেরদৌসী বেগম তার ৪ শিশু সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করেন। এতে ২ সন্তানসহ ফেরদৌসী মারা যান। বাকি দুই সন্তান বেঁচে যায় কিন্তু গুরুতর আহত হয়।
সেই ঘটনা ঘটেছিলো ২০১১ সালের ১৪ আগস্ট। মিডিয়াতে বিষয়টি নজরে এলে সরকার বাদী হয়ে মামলা করে। আসামি করা হয় ২৬ জনকে। ৭ বছর পর, সেপ্টম্বর ২০১৮ সালে সকল আসামি বেকসুর খালাস পায়। ঘটনাটি ঘটে আমার গ্রামের বাড়ির এলাকায়। সুলতানপুর গ্রাম, আন্দিউড়া ইউনিয়ন, মাধবপুর উপজেলা, হবিগঞ্জ জেলায়।
ওই ঘটনায় খালাস পেতে না পেতেই সেই আসামিরাই গত ৮ দিন আগে জানোয়ারের মতো আরেকজনকে হত্যা করে। ঘটনা ঘটে একই ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে। এবার বলি হলেন অভিরাম সরকার।
অভিরাম সরকার, নিঃসন্তান। গত ২২ জুলাই তাকে হত্যা করা হয়। তিনদিন শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল তাকে। অনাহারে তার মৃত্যু ঘটে। মারা যাওয়ার পর সেই ফেরদৌসী মামলার প্রথম সারির আসামিরাই রাতের অন্ধকারে তার সৎকার করে। যেন পোস্টমর্টেম না হতে পারে। কোনও প্রমাণ অবশিষ্ট না থাকে।
তার স্ত্রী অনেক দুর্বলচিত্তের মানুষ। আসামিরা খালাস পাওয়া, শক্তিশালী। ডর ভয়ে তিনি নিশ্চুপ।
কিন্তু আমি এই ঘটনার বিচার দাবি করি। এর জন্য প্রয়োজন মিডিয়া কাভারেজ। মিডিয়ায় বিষয়টি এলেই কোর্ট স্বেচ্ছায় মামলা করতে পারবে এবং এই মামলা বিনা খরচে চালানোর জন্য কয়েকজন প্রস্তুতও আছেন।
যাদের ট্যাগ করেছি আশা করি তারা তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে বিষয়টি তাদের মতো করে খোঁজ নিবেন। প্রয়োজন মনে করলে খবরটি ছাপিয়ে তার হত্যার বিচারে সহযোগিতা করবেন।
ওই এলাকার কারো সাথে কথা বলতে চাইলে আমার কাছে সংশ্লিষ্ট কিছু মানুষের নাম এবং মোবাইল নম্বর আছে। দয়া করে ইনবক্সে যোগাযোগ করুন।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/কালাম