'টিপিক্যাল সাউথ এশিয়ান প্যারেন্টস!'- কথাটা শুনেই ভেতরে কোথায় যেনো খচ করে ওঠে। আবার শুনতে চাই কথাটা। মেয়েদের মধ্যে কোনো রাখঢাক নেই।’
: শোনো বাবা, স্কুলে আমাদের বন্ধুরা সবাই এভাবেই বলে’- মেয়ে জবাব দেয়।
'সাউথ এশিয়ান প্যারেন্টস!’ – কথাটা মাথার ভেতর ভন ভন করতে থাকতে। কথামালা একদিন বলেছিলো- আই ক্যান চার্ম অল 'বেঙ্গলি প্যারেন্টস’।
এই যে আমাদের বাচ্চারা আমাদের ‘বেঙ্গলি প্যারেন্টস’ ভাবে এটা ভালো কি খারাপ এই ভাবনা কখনো মনে উঁকি দেয়নি। এখন দেখছি- বাংলাদেশি ছেলেমেয়েরাই কেবল নয় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য বাচ্চারা মিলেই আরেকটা টার্ম তৈরি করে ফেলেছে- ‘সাউথ এশিয়ান প্যারেন্টস’।
প্যারেন্টসদের সম্পর্কে বাচ্চাদের মনোভাব কি? তারা কি ভাবে আমাদের সম্পর্কে? আমরা তার কতোটুকু জানি? কতোটুকুই বা জানার চেষ্টা করি।
শাপলাকে আমি এই শহরের ঈর্ষা করার মতো মা হিসেবে মানি। অসম্ভব গুনী দুই কন্যার মা শাপলা একদিন কোথায় যেনো মন্তব্য করেছিলো- প্যারেন্টসদের নিয়ে বাচ্চারা কতো ধরনের কৌতুক যে করে!
শহরের কোথায় না কি একটা কমেডি ক্লাব জাতীয় কি একটা আছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ তরুণীদের একটি দল না কি সেখানে একদিন কমেডি শো করেছে, বিষয়- সেই বেঙ্গলি প্যারেন্টস। ঘরে বাঙালি বাবা মারা কি করে তাতো বটেই, ‘দা্ওয়াতে’ ‘বেঙ্গলি প্যারেন্টস’রা কি করে তা নিয়ে কমেডি করেছে এই ছেলেমেয়েরা। কবি পারভেজ চৌধুরীর কাছে কথাটা শুনে আমার কি বিস্মিত হ্ওয়া দরকার ছিলো?
আমার কেবল মনে হচ্ছিলো- আহা! এসব কি আমরা জানি? আমরা এসব জানি না কেন?
সেদিন দেখলাম- ফেসবুকের একটি বড় গ্রুপে- একজন পোস্ট দিয়েছেন- ‘বেয়াদপ পোলাপান- ঘর ভর্তি মানুষের সামনে পায়ের উপর পা তুলে বসে। থাপড়ানো দরকার’। পোস্টটা পড়তে পড়তে ভাবি- আহা! এটাই কি তবে আমাদের পিতৃত্ব! ‘থাপড়ানোটা যে একটা ফৌজদারি অপরাধ’- সেটাও আমরা ভুলে যাই- পিতৃত্বের অহংকারে, নিজের সংস্কৃতির আদব- কায়দা প্রতিষ্ঠার চেষ্টায়। ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমেও কি অবলীলায় সন্তানকে থাবড়ানোর ঘোষণা দিয়ে ফেলি। বাচ্চারা যে ‘সাউথ এশিয়ান প্যারেন্টস’ বলে, ‘বেঙ্গলি প্যারেন্টস’ বলে – এটাই কি তা হলে তার স্বরূপ?
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা