ভিটামিন ডি আমাদের শরীরে হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। হাড় ভাল রাখতে ক্যালশিয়ামের প্রয়োজন। আর শরীরে ক্যালশিয়াম অ্যাবজর্বশনের জন্য ভিটামিন ডি প্রয়োজন। ভিটামিন ডি-র অভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের অস্টিওম্যালেশিয়া হতে পারে। এটির ফলে হাড়ের গঠনে ডিফর্মেশন দেখা দেয়। ভিটামিন ডি-এর অভাবের জন্য আমাদের জীবনযাপনজনিত অভ্যেসও দায়ী। দুধ কম খাওয়া বা শরীরে রোদ না লাগানো বা এয়ারকন্ডিশনড গাড়িতে যাতায়াত করা বা ঠাণ্ডা ঘরে সারাদিন বসে থাকার ফলে এরকম হতে পারে। বয়স্ক মানুষেরা শীতকালে একেবারেই বাইরে না বেরোলে তাদেরও ভিটামিন ডি-এর অভাব দেখা দিতে পারে ব্যাপক হারে। তবে দুপুরবেলা কাঠফাটা রোদে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। বরং সকালের হালকা রোদে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকুন। ভিটামিন ডি-এর অভাবের মূল লক্ষণ হল হাড় নরম হয়ে যাওয়া। এই অসুখের রোগীরা বারবার পড়ে যান ও হাড় ভেঙে যায়।
এছাড়া যাদের গায়ের রং খুব কালো বা পিগমেন্টেশন বেশি তাদের শরীরে সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ঢুকতে বাধা পায়। এরা রিস্ক জোনে আছেন। আবার এটি যেহেতু ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন, তাই ওবিসিটির ফলে ভিটামিন ডি-এর অভাব হতে পারে। সিরোসিস অফ লিভার বা কিডনির কিছু অসুখে এই ভিটামিনের অভাব হতে পারে। এরকম কিছু লক্ষণ থাকলে ডাক্তারেরা অনেকসময় ভিটামিন ডি এস্টিমেশন করতে বলেন। কিন্তু এই পরীক্ষা যথেষ্ট খরচসপেক্ষ। মনে রাখা দরকার, ভিটামিন ডি-র অভাব হলে সাপ্লিমেন্ট খেলে সবসময় লাভ হয় না। যেহেতু এটি ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন, তাই না বুঝে বেশি সাপ্লিমেন্ট খেলে ভিটামিন টক্সিসটি হতে পারে। সুতরাং আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া উত্তম।
ডা. শাহজাদা সেলিম
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।