সুস্থ, সুন্দর, স্লিম আকর্ষণীয় ফিগার কে না চায়। কিন্তু এই সুস্থ দেহের মূলমন্ত্র কিন্তু সঠিক খাবার। তাই সবুজ শাক-পাতা খেয়ে খুব সহজেই আপনি ধরে রাখতে পারেন তারুণ্য। সবুজ শাক-পাতাই রয়েছে ভিটামিন সি, ই, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টি -অক্সিডেন্টসহ নানা উপাদান। নিচে তেমনই কয়েকটি সবুজ শাকসবজি নিয়ে আলোচনা করা হলো :
পালংশাক : পালংশাকের উপকারিতার কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০১৪ সালে সুইডিশ গবেষকদের করা এক তথ্য থেকে জানা গেছে যে, পালংশাক তাড়াতাড়ি পেট ভরায় এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে। এর আঁশ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম – যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে পেশিকে শক্ত করে রক্তের ঘনত্ব কমাতেও সহায়তা করে। শাক সেদ্ধ, স্যুপ বা স্মুদি বানিয়ে খাওয়া যায়।সঙ্গে রসুন, লেবু বা আদা দিলে স্বাদ ও বাড়ে, উপকারও হয় বেশি।
সবুজ ক্যাপসিকাম : বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাস্টফুড এবং আধুনিক জীবনযাত্রাই নানা অসুখের কারণ। ক্যাপসিকামে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম ইত্যাদি। কাঁচা ক্যাপসিকাম শুধু ডায়বেটিস বা অবসাদই দূর করে না, ওজন কমাতেও ভূমিকা রাখে৷। মুরগির বুকের মাংস সেদ্ধ করে ছোট করে কেটে এবং একইভাবে ক্যাপসিকাম কেটে, পুদিনা পাতা, লেবুর রস মিশিয়ে দুপুরে খেয়ে ফেলুন। ভিটামিন, মিনারেল ও আঁশযুক্ত কচকচে এই সালাদ খেলে পেট ভরবে, রাখবে চিরসবুজও।
শসা : গ্রীষ্মকালে শরীরকে ঠান্ডা করতে শসার জুড়ি নেই, কারণ শসার মধ্যে রয়েছে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ পানি। তাই পুষ্টিবিদরা গরমকালে বেশি করে শসা খেতে বলেন। শসায় খুবই কম ক্যালোরি থাকে, প্রচুর পানিযুক্ত শসা শুধু শরীরকেই হালকা-পাতলা রাখে না, শসার মাস্ক বা স্লাইস করা শসা ত্বককে করে স্নিগ্ধ আর সুন্দর। শসা নানাভাবে খওয়া যায়। প্রচণ্ড গরমে শসার কুচি ঠান্ডা পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে তা পান করলে শরীর জুড়িয়ে যায়।
ব্রকোলি : সবুজ ফুলকপি বা সবুজ রং-এর ফুলের মতো দেখতে এই সবজি ভাজি খেতে খুবই মজা এবং সহজে পেটও ভরে যায়। ব্রকোলির মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা ক্যান্সারের টিউমার দমন করে। এই তথ্য দিয়েছেন জার্মানির হাইডেলব্যার্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিকের গবেষক ইনগ্রিড হ্যার। শুধু তাই নয়, ব্রকোলি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমায়। এছাড়া ডায়বেটিস রোগীদের জন্যও দারুণ উপকারি ব্রকোলি।
পুদিনা পাতা : ভেষজ উদ্ভিদ পুদিনা পাতার গুণের কথা কাউকে আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। হাজারো বছর ধরে এই পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে গ্যাসট্রিক, পেটের সমস্যা বা ত্বকের নানা সমস্যায়। নারীদের সৌন্দর্যচর্চায় পুদিনার পাতা খুবই পরিচিত। পুদিনা পাতার রস, চা, চাটনি ইউরোপেও আজকাল বেশ জনপ্রিয়। সবুজ ঔষধি পুদিনা পাতা খেয়ে শরীর ও ত্বককে সবুজ রাখুন। তেমন যত্ন ছাড়াই পুদিনা গাছ বাগান, টব বা পানিতে হয়।
বরবটি : সবুজ বরবটিতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, প্রোটিন, আয়রন, ক্যালশিয়াম ও শর্করা – মানে প্রচুর পুষ্টি গুণ। এই কারণে ডায়বেটিস রোগীদের জন্যও বরবটি বেশ উপকারি। বরবটি নানাভাবে খাওয়া যায়। জলপাইয়ের তেলে সামান্য ভেজে খেতে দারুণ লাগে এই সবজি৷ তাছাড়া পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সবুজ সবজির মধ্যে বরবটি একটি, যা অল্প খেলেই পেট ভরে যায়। অর্থাৎ বাড়তি মেদ হবার কোনো সুযোগ নেই বলে ফিট ও সুন্দর থাকা যায় সহজেই।
সালাদ পাতা : বিভিন্ন সবুজ সালাদ বা লেটুস পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়ক। সবজিতে থাকা ভিটামিন সি এবং ই সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে আপনাকে রক্ষা করতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া শাক বা সালাদ পাতা খাবার সাজানোর জন্যও ব্যবহার করা যায়, যা দেখতে সুন্দর তো লাগেই, খাবারে রুচিও বাড়ায়। তবে শাক-সবজির ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি হলো একে হতে হবে একদম টাটকা। তা না হলে স্বাদে এবং গুণে হেরফের হবেই।
বিডি-প্রতিদিন/২৯ জুলাই ২০১৫/শরীফ