ইসলামিক স্টেটসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তৎপর সব ধরনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তৎপরতা মোকাবিলার লক্ষ্যে জাতিসংঘে উত্থাপিত ফ্রান্সের প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের চীন ও রাশিয়াসহ স্থায়ী পাঁচ সদস্য দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেন। জাতিসংঘে প্রস্তাবটি উত্থাপনের ২৪ ঘণ্টা পরই এটি পাস হয়। বিশ্বসংস্থায় নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফ্রঁসোয়া দেলাতখ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। খবর দ্য ইন্ডিপেন্টের
গত ১৩ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় আইএস। এ হামলায় ১২৯ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে গোলাগুলি ও নিজেদের সঙ্গে থাকা বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রাণ যায় ৮ হামলাকারীর। এ হামলাকে 'যুদ্ধের কর্মকাণ্ড' আখ্যায়িত করে ফ্রান্স সরকার অা্ইএস'র বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। এরই প্রেক্ষিতে ফ্রান্স সরকার অাইএসবিরোধী লড়াইয়ে পুরো বিশ্বকে একত্রিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘে ওই প্রস্তাবটি উত্থাপন করে।
শুধু প্যারিসে হামলা নয়, সম্প্রতি বিশ্বের বেশ ক'টি জায়গায় সন্ত্রাসী হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে আই্এস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বাসভবন হোয়াইট হাউস, নিউইযর্কে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি দেয় গোষ্ঠীটি। এছাড়া মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আসিয়ান সম্মেলন শুরুর প্রাক্কালে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি দেয় আইএস। হুমকির প্রেক্ষিতে সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীও বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার ফ্রান্সের সাবেক কলোনি মালির রাজধানীর বামাকোর একটি লাক্সারি হোটেলে হামলা চালায় আল কায়েদার একটি শাখা। এ হামলায় চীনের শীর্ষ তিন কর্মকর্তাসহ ২৭ জনের মৃত্যু হয়। ৩১ অক্টোবর মিশরের সিনাই উপত্যকায় ২২৪ জন আরোহীসহ রাশিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান বোমা দিয়ে বিধ্বস্ত করে। এছাড়া আফগানিস্তানে অজ্ঞাত একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা গতকাল দিবাগত রাতে ১৪ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এককথায়, সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এর প্রেক্ষিতে পুরো বিশ্বকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একত্রিত করার উদ্যোগ নেন ফ্রান্স।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ২ সদস্য রাশিয়া ও চীন সাধারণত জাতিসংঘের এই পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে থাকেন। তবে ফরাসি প্রস্তাবের ক্ষেত্রে তা করেনি দেশ দুটি। কারণ উভয় দেশই সম্প্রতি আইএস'র সন্ত্রাসী তৎপরতার শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি চীনা এক বন্দিকে হত্যা করেছে আইএস। আর রাশিয়ার যাত্রীবাহী বিমান ২২৪ জন অারোহীসহ বিধ্বস্ত করেছে তারা। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ফরাসি প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট চাপ ছিল রাশিয়া ও চীনের উপর।
বিডি-প্রতিদিন/২১ নভেম্বর ২০১৫/শরীফ