২০২৫ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে সিঙ্গাপুরের সাধারণ নির্বাচন। চলতি বছরের ১১ মার্চ ইলেকটোরাল বাউন্ডারি রিভিউ কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলো বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা শুরু করেছে তারা। তবে নির্বাচনের মূল প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি।
দলগুলো অপেক্ষা করছে ‘রিট অব ইলেকশন’ নামে একটি সরকারি ঘোষণার। যেটি নির্বাচনের তারিখ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানিয়ে দেয়। এ ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট জারি করেন। এই রিট ঘোষণার পরে জানানো হবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ও ভোট দেওয়ার দিন।
আগে যেসব নির্বাচনে এই রিট দেওয়া হয়েছিল, সেখানে সময়সীমা ভিন্ন ছিল। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে যিনি থাকবেন, তাকে বলা হয় রিটার্নিং অফিসার। মনোনয়নের দিন প্রার্থীরা তাদের কাগজপত্র জমা দেন। প্রার্থীর সঙ্গে একজন প্রস্তাবকারী, একজন সমর্থনকারী ও অন্তত চারজন সমর্থক থাকতে হয়।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সকাল ১১টা থেকে ১২টা। এ সময়ের মধ্যেই প্রার্থীদের নির্বাচনী জামানত জমা দিতে হয়, যা এমপিদের মাসিক বেতনের সমান বা কাছাকাছি হয়। ২০২০ সালে জমা নির্বাচনী জামানতের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। যদি কোনো প্রার্থী মোট ভোটের কমপক্ষে ১২.৫ শতাংশ পান, তাহলে এই টাকা তাকে ফেরত দেওয়া হয়।
মনোনয়নের সময় শেষ হলে প্রার্থীরা একে অন্যের কাগজপত্র দেখে আপত্তি তুলতে পারেন। কারোর আপত্তি যদি রিটার্নিং অফিসার গ্রহণ করেন, তাহলে সেই প্রার্থী নির্বাচন করতে পারবেন না। যদি একটি আসনে একাধিক প্রার্থী থাকেন, তাহলে নির্বাচন হবে। আর যদি একজনই থাকেন, তাহলে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। এটি ‘ওয়াকওভার’ নামে পরিচিত।
মনোনয়ন শেষে প্রার্থীরা ধন্যবাদ বক্তব্য দিতে পারেন, যা টিভি ও অনলাইনে সম্প্রচারিত হয়।
দলের প্রচারণা শুরু হয় মনোনয়নের পরদিন থেকেই এবং এটি চলে ‘কুলিং অব ডে’ পর্যন্ত। প্রচারণার সময় প্রার্থীরা পথসভা করতে পারেন, লিফলেট বিলি করতে পারেন, পোস্টার টাঙাতে পারেন, ঘরে ঘরে যেতে পারেন ও অনলাইনে প্রচার চালাতে পারেন। তবে পুলিশের অনুমতি নিয়ে নির্ধারিত স্থানে পথসভা করতে হয়।
ভোটের আগের দিনকে বলা হয় ‘কুলিং অব ডে’। এই দিন পুরোপুরি প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকে, যেন ভোটাররা নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
এরপর আসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন—ভোটের দিন। সিঙ্গাপুরে এই দিন সরকারিভাবে ছুটি ঘোষিত থাকে। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। ভোট শেষ হলে ব্যালট বাক্সগুলো ভোট গণনার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই ফলাফল জানানো হয়, যদিও তার আগেই ‘স্যাম্পল কাউন্ট’ প্রকাশ পায়। যা থেকে একটা মোটামুটি ধারণা পাওয়া যায় কে জিততে পারে।
সূত্র : দ্য স্ট্রেইটস টাইম
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ