মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আহমদ বাদাবি আর নেই। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর সোমবার (১৪ এপ্রিল) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৫ বছর বয়সে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়।
কুয়ালালামপুর থেকে এএফপি জানায়, 'পাক লাহ’ বা ‘আঙ্কেল লাহ’ নামে সমাদৃত আব্দুল্লাহ ২০০৩ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেন মাহাথির মোহামাদের কাছ থেকে, যিনি ২২ বছর কঠোর হাতে দেশ শাসন করে পদত্যাগ করেছিলেন।
আব্দুল্লাহ ২০০৯ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে তার জোট সাধারণ নির্বাচনে খারাপ ফল করার পর এবং মাহাথিরের তীব্র সমালোচনার মুখে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়, যদিও মাহাথিরই তাকে মনোনীত করেছিলেন।
উদারপন্থী ও পিতৃসুলভ স্বভাবের আব্দুল্লাহ ছিলেন তার আগের কর্তৃত্ববাদী পূর্বসূরির সম্পূর্ণ বিপরীত। তার সময়ে মালয়েশিয়া কর্তৃত্ববাদ থেকে কিছুটা মুক্তি পায়, যা ২০০৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় জোটের বড় জয়ের পেছনে ভূমিকা রাখে। তবে অনেকেই তাকে দুর্বল নেতৃত্বের অধিকারী বলেও বিবেচনা করেছিলেন। দায়িত্ব ছাড়ার পর আব্দুল্লাহ বেশ নীরব জীবনযাপন করছিলেন।
মালয়েশিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আব্দুল্লাহকে ‘একজন মহান আত্মার মানুষ’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তিনি ‘মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে ক্ষমতার এক নতুন বয়ান সূচনা করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, তিনি ছিলেন এমন এক নেতা যার মুখে রাগ ছিল না, হাতে ছিল না ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার তাড়া, এবং কণ্ঠ ছিল শান্ত—অবিরাম আক্রমণের মুখেও।
আনোয়ার বলেন, মাহাথিরের শাসনামলে কারাবন্দি থাকাকালেও আব্দুল্লাহ কখনও তাকে কোনো অপমানজনক কথা বলেননি। পাক লাহ ছিলেন এমন এক ব্যক্তি, যিনি প্রতিশোধ নিতে পারলেও বরাবর শান্তির পথ বেছে নিয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং বলেন, আব্দুল্লাহ তার ছয় বছরের শাসনকালে মালয়েশিয়ার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেই আমি পাক লাহকে চিনতাম। তিনি গভীর নিষ্ঠা নিয়ে তার দেশকে সেবা দিয়েছেন এবং মালয়েশিয়ার সংকট মোকাবিলায় ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নপ নিরলসভাবে কাজ করেছেন। সূত্র: এপি
বিডি প্রতিদিন/নাজিম