আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এর সঙ্গে আইনশৃংখলা বাহিনী বা কোনো ব্যক্তিও যদি জড়িত থাকে তার বিচার হবে। এখানে সরকার কাউকে ছাড় দেবে না। বিচার নিয়ে কোনো রাজনীতি হবে না। এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শিগগিরই জড়িতদের জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন। আহসান উল্লাহ মাস্টারের দশম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
আমু বলেন, বিএনপির সিনিয়র এক নেতার বক্তব্যের পর থেকে নারায়ণগঞ্জসহ দেশব্যাপী গুম ও হত্যাকাণ্ড বেড়ে গেছে। এর দায় বিএনপি কোনভাবেই এড়াতে পারে না। ২০০৮ সালের পর থেকে বিএনপির নেতারা যে ভাষায় কথা বলছে সেটা সাংবিধানিক ভাষা না। এটা অস্ত্রের ভাষা।
দেশের সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই তারা মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান ও শাসন ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছে। বিরোধীদলকে গণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমরা চাই আপনারা গণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলুন। গণতন্ত্রের পথে থাকুন। তা হলে আমাদের পক্ষ থেকে কোন প্রকার বাধা আসবে না। নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।
দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমেরিকাসহ পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে যখন মন্দা চলছে। তখন বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। যে গার্মেন্ট নিয়ে এত কথা সেখানে প্রধানমন্ত্রী নিজে ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২১ সালের মধ্যে দেশ মধ্যম আয়ের ও ৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে যোগ করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তারেক জিয়ার 'খোয়াব ভবন'-এর অপকর্মের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ায় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তারেক জিয়া টঙ্গীতে খোয়াব ভবন করেছিলেন। সেখানে গভীররাতে তার যাতায়াত ছিল রহস্যজনক। সেখানে মাদক ব্যবসায়ীদের ছিল অবাধ যতায়াত। ওই খোয়াব ভবনের প্রতিবাদ করায় খালেদা জিয়ার পোষ্য গুণ্ডারা তাকে হত্যা করেছে।
মন্ত্রী বলেন, গাজীপুর থেকে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা গাজীপুর থেকে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে পারেনি। বরং আরো ঐক্যবদ্ধ হয়ে হয়েছে।
'আহসান উল্লাহ মাস্টার স্মৃতি পরিষদ'-এর সভাপতি আব্দুল বাতেনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা পরিষদ প্রশাসক আক্তারুজ্জামান, আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, আওয়ামী লীগের শ্রমিকবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, শ্রমিক নেতা ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম প্রমুখ।