ট্যাক্সির চেয়ে কম ভাড়ায় ভারতীয়দের মহাকাশ ঘুরিয়ে আনার কথা ভাবছে ইসরো! এজন্য কিলোমিটার পিছু ভাড়া গুনতে হবে বড়জোর সাত টাকা করে! ইসরো ইতোমধ্যে তাদের ভাবনা বাস্তবায়ন করতে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে।
ইসরো সূত্রের খবর, উবেরে চাপলে কিলোমিটার-পিছু যতটা ভাড়া গুনতে হয়, ৬৫ কোটি কিলোমিটার দূরে মঙ্গলের কক্ষপথে পাক মেরে আসতে কিলোমিটার প্রতি তার চেয়ে অনেকটাই কম ভাড়া গুনতে হবে মহাকাশ পর্যটকদের। যাত্রার আগে অন্তত এক বছর ধরে কঠোর অনুশীলনের মধ্যে থাকতে হবে মহাকাশযাত্রীদের। দিতে হবে ফিটনেস পরীক্ষা। সবকিছু ঠিক থাকলে তবেই যাওয়া যাবে মহাকাশে।
ইসরোর এক পদস্থ কর্তা বৃহস্পতিবার আনন্দবাজারকে বলেছেন, ‘‘এটা আর ইসরোর ভাবনা-চিন্তার চৌহদ্দিতেই আটকে নেই। ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। মহাকাশকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের প্রস্তুতি অনেক দিন আগেই নিতে শুরু করে ইসরো। প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালামের বহু দিনের সেই স্বপ্নের সার্থক রূপায়ণ ঘটে যখন ফেব্রুয়ারিতে ৮২টি বিদেশি উপগ্রহসহ একইসঙ্গে ১০৪টি উপগ্রহকে মহাকাশে পাঠায় ইসরো। এবার মহাকাশকে আরও বেশি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে চাইছে ইসরো, সাধারণ ভারতীয়দের জন্য সস্তায় মহাকাশ পর্যটনের ব্যবস্থা করে। হিসেব কষে দেখা গেছে, এলন মাস্কের ‘স্পেস-এক্স’ ও আমাজনের আসন্ন মহাকাশ পর্যটনের ঘোষিত স্কিমগুলির চেয়ে খরচের নিরিখে, তা অনেকটাই কম হবে। কিলোমিটার-পিছু খরচ পড়বে খুব বেশি হলে সাত টাকা। অতটা খরচও হতো না, যদি না মহাকাশ পর্যটকদের জন্য আলাদাভাবে অত্যন্ত সুরক্ষিত লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হতো। ইসরোর কমার্শিয়াল আর্ম ‘অ্যানট্রিক্স’ হিসেব কষে দেখেছে, এই দশকের মধ্যেই আন্তর্জাতিকভাবে প্রতি বছর গড়ে ৭৫ থেকে ১৩০টি করে মহাকাশ পর্যটন হবে। আর সেই মহাকাশ পর্যটনের জন্য উপগ্রহ-পিছু খরচ পড়বে সাড়ে সাত কোটি ডলারের মতো।’’
ইসরোর ওই পদস্থ কর্তাটির কথায়, ‘‘গড়পড়তা ওজনের ভারতীয়দের মহাকাশ পর্যটনের জন্য কিলোগ্রাম-পিছু ভাড়া গুনতে হবে ২ লক্ষ টাকা করে। তার সঙ্গে থাকবে মহাকাশ পর্যটকদের জন্য জরুরি লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের ব্যবস্থার জন্য খরচ। সব মিলিয়ে পড়তে পারে মোটামুটি ১২ কোটি টাকা বা ২০ লক্ষ ডলারের মতো। এক সপ্তাহের জন্য মঙ্গলের কক্ষপথে গিয়ে পাক মেরে আসার জন্য ‘স্পেস-এক্স’-এর মতো সংস্থাগুলির ভাড়ায় একজন মহাকাশ পর্যটককে খরচ করতে হবে ৩ থেকে ৪ কোটি ডলার।’’
ইসরোর জনসংযোগ অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ কার্নিক অবশ্য বলছেন, ‘‘খুব শিগগিরই মহাকাশে মানুষ পাঠানোর কথা না-ও ভাবা হতে পারে। তবে বিজ্ঞান অনেক কিছুই সম্ভব করে তুলতে পারে! লেগে যেতে পারে হয়তো আরও একটা দশক!’’ সূত্র: আনন্দবাজার।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ