২৩ বছর বয়সের তরতাজা ভগৎ সিংকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। কিন্তু যে মামলায় ফাঁসি হয়, সেই মামলার এফআইআর- এ নামই ছিল না ভগৎ সিংয়ের! সম্প্রতি এমনই তথ্য পেল ভগৎ সিং মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন।
সংগঠনটি পাকিস্তানের বুকে ভগৎ সিংয়ের কীর্তিকলাপ সংরক্ষণ করতে কাজ করছে দীর্ঘদিন। এর চেয়ারপার্সন ইমতিয়াজ রশিদ কুরেশি ভগৎ সিংয়ের ফাঁসির ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন লাহোর হাই কোর্টে। আদালত সেই মোতাবেক পুলিশকে নির্দেশ দেয়। পুলিশের দেওয়া তথ্য থেকেই জানা গেল দীর্ঘদিন চাপা পড়ে থাকা আইনের এ বেআইনী কীর্তির কথা।
১৯২৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর অজ্ঞাতপরিচয় যুবকদের গুলিতে খুন হন পুলিশের এসএসপি জন সন্ডার্স। ওইদিনই বিকেলে লাহোরের আনারকলি থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। সেই এফআইআরে ভগৎ সিংয়ের নাম ছিল না। ছিল না রাজগুরু এবং সুখদেবের নামও। 'অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারী' শব্দগুলি ব্যবহার করা হয়েছিল। অথচ এই এফআইআরের ভিত্তিতে মামলা শুরু হয় এবং ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে আদালত।
১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ ভগৎ সিং, সুখদেব ও রাজগুরুকে ফাঁসি দেওয়া হয়। সেই সময় ৪৫০ জন সাক্ষী ছিল। একজনেরও বয়ান নেওয়া হয়নি। যে পুলিশ অফিসাররা বলেছিলেন, ভগৎ সিং দোষী শুধু তাঁদের কথার ওপর গুরুত্ব দেন বিচারক। এই পুলিশ অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেওয়া হয়নি ভগৎ সিংয়ের আইনজীবীকে। ব্রিটিশরা সেইদিন নিজেদের তৈরি আইনকেই বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিনজন অল্পবয়সী যুবককে ফাঁসিতে ঝোলায়।
ইমতিয়াজ কুরেশি জানান, তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ হবে ভগৎ সিংকে সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণ করা। এই মর্মে তিনি লাহোর হাই কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের হেফাজতে থাকা সব তথ্যপ্রমাণ চেয়ে পাঠানোর ব্যাপারে আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছেন।