মালয়েশিয়ার একটি পর্বতে উঠে নগ্ন ছবি তোলায় চার পর্যটককে জেল-জরিমানা করেছেন দেশটির আদালত। সাজাপ্রাপ্ত চার পর্যটক হলেন— ব্রিটেনের নাগরিক এলিনর হকিন্স, কানাডার নাগরিক লিন্ডসে ও ড্যানিয়েল পিটারসন এবং নেদারল্যান্ডসের নাগরিক দিলান স্নেল। আদালতে তারা তাদের কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
মালয়েশিয়ার লোকজন মনে করেন, দেশটির কিনাবালু পর্বতে ওই পর্যটকদের বিবস্ত্র হওয়ার কারণেই ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। কারণ তাদের মতে, ওই পর্বত পবিত্র। এ জন্য তাদেরকে তিনদিন করে কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে পাঁচ হাজার রিংগিত বা এক হাজার ৩৩১ ডলার করে জরিমানা করা হয়।
তবে তাদেরকে যে তিনদিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তা আর ভোগ করতে হবে না। কারণ ইতোমধ্যে সে সময় তারা পার করেছেন। অভিযুক্তদের আইনজীবীরা বলেছেন, তারা এখন জরিমানা পরিশোধ করলেই নিজ দেশে ফিরতে পারবেন।
গত ৫ জুন মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশের বর্নো দ্বীপে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে এক ব্যক্তি নিহত ও ১৯০ জন পর্বতে আটকা পড়ার খবর পাওয়া যায়। আর ভূমিকম্পের জন্য ন্যুডিস্টদের দায়ী করেন স্থানীয় জনগণ। তাদের অভিযোগ, পর্যটকরা নগ্ন হয়ে ছবি তুলে স্থানটির পবিত্রতা নষ্ট করেছেন। এজন্যই ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। পাহাড়ে নগ্ন হয়ে ছবি তোলায় 'আকি' (পাহাড় রক্ষাকারী) ভূমিকম্পের মাধ্যমে তাদের শাস্তি দিয়েছেন।
সাবাহ প্রদেশের এক ওয়েব ডেভেলপার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, রানাউ পাহাড়ের পবিত্র স্থানে নগ্ন হয়ে মূত্রত্যাগের কারণে পাহাড়ি আত্মারা অপমানিত বোধ করেছেন। তাই তারা ভূমিকম্পের মাধ্যমে প্রতিশোধ নিয়েছেন। দেশটির অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ 'ন্যুডিস্টদের' বিরুদ্ধ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জুলফাহমিআব-সালাম টুইটারে লিখেছেন, কিনাবুলু পাহাড় হয়তো এসব নগ্ন দর্শনার্থীদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছে।
৩০ মে কিনাবালি পাহাড়ে পাঁচ অর্ধনগ্ন পর্যটকের তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ৪ নারীসহ ১০ জনের আরেকটি অর্ধনগ্ন দলের ছবি পোস্ট করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে সাবাহা'র নাগরিকরা এর বিরোধিতা করেন, কারণ তারা মনে করেন এ পাহাড়টি পবিত্র।
সাবাহ পার্কের পরিচালক দাতুক জামিলি নাইস বলেন, ৪ জন নারী এবং ৬ জন পুরুষের দলটি আলাদা হয়ে দক্ষিণ চূড়ার দিকে গিয়েছিল। তারা তাদের গাইডের কথা অমান্য করে এ কাজটি করেছে। এ ঘটনার পর ওই গাইডকে একটি কারণ-দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অন্য গাইডদেরও এ ব্যাপারে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন আর কেউ এমন কাজ করতে না পারে।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ জুন ২০১৫/ এস আহমেদ