মাথা আলাদা করা মানে তার দেহ থেকে জীবনটা আলাদা। অথচ মাথা ছাড়াই দিব্য বেঁচে রইলেন ১৮ মাস। শুনে মনে হতে পারে গালগল্প। উদ্ভট বলে, উড়িয়েও দিতে পারেন। তা হলে শুনে রাখুন এটাই সত্যি, ষোলয়ানার ওপর আঠারো আনা। মার্কিন মুরগি 'মাথা' ছাড়াই বেঁচে ছিল দেড় বছর! নাম তার মাইক। ভাবছেন কি জন্মগত ত্রুটি? না, তা নয় কখনোই। বলতেই যদি হয় কিছু, সেটা 'অঘটন'ই।
যুক্তরাষ্ট্রের মিচিগানের ওই অদ্ভুতুড়ে মুরগি 'মাইক'-এর মালিকের নাম লয়েড ওলসেন। দিনটা ১৯৪৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। ডিনারে মাংস খাবেন বলেই লয়েড তার পোষ্য মাইকের মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কিন্তু, খেয়াল করেন মাইক মরেনি। দ্রুত রক্ত জমাট বেঁধে, তার রক্তক্ষরণের পথ বন্ধ করে দেয়। শুধু তাই নয়, মস্তিষ্ক বিচ্ছিন্ন হলেও তার শরীরের নার্ভাস সিস্টেমেও এর কোন প্রভাব পড়েনি। দু-এক ঘণ্টা বা দু-একদিন নয়, এ ভাবেই সেই মিচিগান মুরগি বেচে ছিল আঠারোটা মাস। পরবর্তীতে যার ব্যাখ্যা খুঁজের পাননি লয়েড। শুধু খেয়াল করেছিলেন, মাথা কাটা গেলেও ঘাড়ের একটি শিরা আশ্চর্যজনক ভাবে রক্ষে পেয়ে গিয়েছিল। এই দৃশ্য দেখে মায়া হয় লয়েডের। এজন্য ভবিষ্যতে আর মারার চেষ্টাও করেননি পোষ্যকে।
কিন্তু, কেন এমন হল? নিজের সেই কৌতূহল মেটাতেই মাইককে তিনি নিয়ে যান সল্ট লেকের উটাহ ইউনিভার্সিটিতে, গবেষণার জন্য। সঙ্গের ছবিটি সেই ইউনিভার্সিটিতেই তোলা। ছবিটি সেই সময় সমস্ত নামী দৈনিক ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। শুধু ছবি প্রকাশই নয়, মাইক যত দিন বেঁচেছিল, তার মালিক প্রতিমাসে পেয়েছন ৪,৫০০ মার্কিন ডলার। মুণ্ডহীন মাইকের সেই মনোবলের কথা মনে রেখে মিচিগানে আজও মধ্য মে'তে পালিত হয়, মাইক, দ্য হেডলেস চিকেন'।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ জুন, ২০১৫/মাহবুব