যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারলিনার চার্লস্টনের কৃষ্ণাঙ্গদের গির্জায় সম্প্রতি শ্বেতাঙ্গ এক যুবক কর্তৃক ৯ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সমগ্র কমিউনিটিতে বর্ণবাদ বিরোধী ঐক্য গড়ার আহ্বানে নিউইয়র্কে অভিনব এক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে সাদা-কালো-বাদামি তথা সর্বস্তরের আমেরিকানদের সমাবেশ ঘটে। সকলে দৃপ্ত প্রত্যয়ে উচ্চারণ করেন সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে যে কোন ধরনের বর্ণবাদী আক্রমণকে রুখে দেয়ার।
এ সময় সকলে সমস্বরে শ্লোগান ধরেন ‘বর্ণবাদ নিপাত যাক’, ‘বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হও’, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘কৃষ্ণাঙ্গরা আক্রান্ত হলে আমরা কী করবো-রুখে দাঁড়াও প্রতিরোধ করো’, ‘ইমিগ্র্যান্টরা আক্রান্ত হলো আমরা কী করবো-রুখে দাঁড়াও প্রতিরোধ করো’, ‘এটি আমাদের কর্তব্য মুক্তির জন্যে প্রতিরোধ করার’, ‘এটি আমাদের প্রতিজ্ঞা বিজয়ী হবার’, ‘আমরা অবশ্যই পরস্পরকে ভালোবাসবো এবং একজনের বিপদে আরেকজন ঝাঁপিয়ে পড়বো’, ‘আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করবো না’ ইত্যাদি।
গত ১৭ জুন সাউথ ক্যারলিনার চার্লস্টন গির্জায় প্রার্থনারত ৯ জনকে গুলি করে হত্যা পরবর্তী পরিস্থিতির আলোকে কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর শ্বেতাঙ্গদের হামলার প্রতিবাদ, অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরও বর্ণবাদী হামলা এবং বিদ্বেষমূলক আচরণের বিরুদ্ধে সচেতন সকল আমেরিকানকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বানে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ান ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ড্রাম’ (দেশীজ রাইজিং আপ এ্যান্ড মুভিং) এ অভিনব কর্মসূচির আয়োজন কের। কর্মসূচিতে অংশ নেন বাংলাদেশি, পাকিস্তানি, ভারতীয়, শ্রীলংকান, নেপালি, মেক্সিকান, ডমিনিকান, স্প্যানিশ এবং আফ্রিকান-আমেরিকানরা।
এ সময় ডাইভার্সিটি প্লাজায় বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষকে নিয়ে পৃথক পৃথক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। আমেরিকায় দুই শতাধিক বছর যাবৎ কৃষ্ণাঙ্গরা কীভাবে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হচ্ছেন, অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের কী ধরনের পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে, কৃষ্ণাঙ্গদের মতোই দক্ষিণ এশিয়ান এবং আরব-আমেরিকান তথা মুসলমানেরা এখনও নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ইত্যাদির আলোকে সচিত্র পোস্টার প্রদর্শন করা হয় উপস্থিত মানুষের সামনে। এ সময় উপস্থিত লোকজন আয়োজকদের কাছে জানতে চান যে. এহেন পরিস্থিতির অবসানে কী করা উচিত?
জবাবে আয়োজন সংগঠকরা বলেন, ‘কে কোন দেশ বা কোন অঞ্চল বা কোন ভাষার মানুষ-সেটি ভুলে গিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রতিটি সমাজে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সম্প্রীতির বন্ধন সুসংহত করতে হবে।’
বাংলা ভাষার মানুষদের ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন রোকসানা ও মনোলোভা। উর্দু ও হিন্দি ভাষার মানুষদের ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন কাজী ফৌজিয়া এবং তালিয়া। ইংরেরজি ভাষার মানুষদের ওয়ার্কশপ পরিচালনায় ছিল নাইম ও শিখা। ফিলিপাইনের লোকজনের কর্মশালা পরিচালনা করেন মোনালিসা। কর্মশালা পরিচালকের সকলেই ছিলেন নতুন প্রজন্মের অভিবাসী এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষর্থী।
বিডি-প্রতিদিন/২৬ জুন, ২০১৫/মাহবুব