নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রুকলিনে চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডে পাঁচতলায় নিজ এপার্টমেন্টের রান্নাঘরের জানালা দিয়ে লাফিয়ে থেকে লাফ দিয়ে বেকারত্বের যন্ত্রণা লাঘব করলেন নোয়াখালীর সুধারামপুরের সন্তান অসীম পাল (৪১)। বুধবার ভোররাতে নিকটস্থ কিংস কাউন্টি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে তার স্ত্রী বিথি পাল জানান। এর কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ৪৪৫, ইস্ট ফাইভ স্ট্রিটে নিজ বাসার রান্না ঘরের জানালা দিয়ে লাফ দেন। স্ত্রী-সন্তানদের আর্ত-চিৎকারে সকলে দৌড়ে নিচে থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে ওই হাসপাতালে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা শত চেষ্টা করেও দুই শিশু সন্তানের জনক অসীম পালকে বাঁচাতে পারেনি।
বিথি পাল বলেন, ১৯৯৭ সালে ডিভি লটারি জিতে আমেরিকা এসেছিলেন অসীম পাল। এরপর দেশে গিয়ে আমাকে বিয়ে করেন। স্বামীর স্পন্সরে আমি আমেরিকায় এসেছি ২০০৫ সালে। আমাদের বড় সন্তান বিজয় সপ্তম গ্রেডে যাবে আসছে সেপ্টেম্বরে। অপর সন্তান পূর্ণতার বয়স ৪ বছর।’ তিনি বলেন, ‘এ বছরের জানুয়ারি থেকেই আমার স্বামী বেকার। শত চেষ্টা করেও কাজ জুটাতে পারেননি। এরইমাঝে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে তার বড়ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমি কবীর’স বেকারিতে কাজ করে সংসারের ঘানি টানছি।’ বিথি বলেন, বেকার জীবন তার সহ্য হচ্ছিল না। মানসিকভাবে একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছিলেন। এখন আমি দুই শিশু সন্তান নিয়ে কীভাবে সংসার চালাবো সে দুশ্চিন্তায় পড়লাম।
অসীম পালের মরদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার মরদেহ পেলে তার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের প্রস্তুতি হিসেবে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। একইসাথে নোয়াখালী সোসাইটির পক্ষ থেকেও তার দু:স্থ পরিবারের সহায়তায় কিছু করার চেষ্টা চলছে বলে সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ জুলাই, ২০১৫/ রশিদা