গুলশানের আর্টিজান রেস্তোরাঁ এবং শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ, জঙ্গিবাদ নির্মূলে শেখ হাসিনা সরকারের গৃহিত পদক্ষেপের সমর্থন এবং জঙ্গিবাদের হোতা হিসেবে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে সর্বস্তরের প্রবাসীদের অংশগ্রহণে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বিকেলে জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় এ মানবন্ধন কর্মসূচির সঞ্চালনায় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুন।
বিপুলসংখ্যক নারীসহ সর্বস্তরের প্রবাসীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন ভিনদেশীদেরও দৃষ্টি কাড়ে। প্রায় সকলের হাতেই ছিল সন্ত্রাস নির্মূলের স্লোগান সম্বলিত পোস্টার-প্লেকার্ড। লেখা ছিল ‘শেখ হাসিনার অঙ্গিকার-রুখতে হবে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ’, ‘আমরা সবাই মুজিব সেনা-ভয় করিনা গ্রেনেড বোমা’, ‘ষড়ঙন্ত্রের কালো হাত-ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’, সেক্যুলার বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ঠাঁই নেই’, ‘মুজিবের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নেই’ ‘একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ ইত্যাদি।
সমগ্র কর্মসূচির সমন্বয় করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। সাথে ছিলেন বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিত্বকারি প্রবাসীরা।
মানববন্ধনে বক্তৃতাকালে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ বলেন, ‘মুজিবের বাংলায় রাজাকারের যেমন ঠাঁই নেই, একইভাবে জঙ্গিবাদের ঠাঁই হবে না।’ ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। এই এগিয়ে চলাকে যারা সহ্য করতে পারছে না, তাদের মদদেই সন্ত্রাসী তৎপরতা শুরু হয়েছে। তাই ওদেরকে শক্তহাতে প্রতিহত করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান টনি বলেন, ‘একাত্তরের ঘাতক মীর কাশেমের বিচার ঠেকাতেই জঙ্গিবাদ উস্কে দেয়া হয়েছে। তাই, একাত্তরের চেতনাতেই জামায়াত-শিবিরের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে হবে।’
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশকে ধর্মীয় সন্ত্রাসমুক্ত করতে প্রবাসীরা আজ ঐক্যবদ্ধ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের অপতৎপরতা রুখে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমরা সকলেই।’
যুক্তরাষ্ট্র উদীচির নেতা সুব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। একে রুখে দিতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে।’
বক্তাদের মধ্যে আরো ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, গণজাগরণ মঞ্চের মিনহাজ সাম্মু, চলচ্চিত্রকার কবীর আনোয়ার, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট সরাফ সরকার, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহবায়ক তারেকুল হায়দার চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
নারী নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন রমা ইসলাম, সেফু রহমান, মিনা ইসলাম, বাবলী হক, মেহের চৌধুরী, নেলী আলম, সুফিয়া খানম, হুসনে আরা প্রমুখ।
এদিকে, একইদিন বিকেলে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জঙ্গিবাদের মদদদাতাদের রুখে দেয়ার লক্ষ্যে সমগ্র বাঙালি জাতির ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য কামনায় আরেকটি মানববন্ধন হয়। মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচির সমন্বয় করে যুবলীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন মেট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শিব্বির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী বাকি, যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সেক্রেটারি সর্বজিৎ দাস তুর্য, মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মোহসিনা রীমা, মুক্তিযোদ্ধা-লেখক হারুন চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্য বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দায়ী করে বলেন, ‘জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করতে আর কালক্ষেপনের অবকাশ নেই।’
বিডি-প্রতিদিন/১৪ জুলাই, ২০১৬/মাহবুব