জীবিকা নির্বাহে পরিবার পরিজনকে নিয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে সম্মানের সাথে চলতে সর্বদা প্রয়োজন অর্থের। স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনেকের মত কাইয়ুম বাহারও পাড়ি জমায় প্রবাস নামক দেয়াল বিহীন কারাগারে। দেশের মত প্রবাসেও হাতেগোনা কিছু নিঃস্বার্থ নিবেদিত মানুষ রয়েছেন। যারা দেশ ও জাতীর কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন নীরবে। তাদের নেই কোন চাওয়া পাওয়া, আত্মতৃপ্তি তাদের খোরাক। কুয়েতে এমন একজন তিনি কুয়েত প্রবাসী চিত্রশিল্পী জহুরুল কাইয়ুম বাহার (৫৭)।
জহুরুল কাইয়ুম বাহার ১৯৮৮ সালে কুয়েতে আসেন। প্রবাসে কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও তিনি নিজের শখ চিত্র আঁকা ছাড়তে পারেননি। ১৯৯৬ সালে ছোট আকারে বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছা শ্রম দেওয়া প্রবাসীকে নিয়ে বঙ্গরুপা চারুকারু সঙ্গীত শিশু মেলা নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেন। বর্তমানে কুয়েতের বিভিন্ন অঞ্চলে ১২টির উপরে এর শাখা আছে। সবকটিতে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ছবি আঁকা, বাংলা শিক্ষা, নৃত্য, নাট্য, সাহিত্যসহ বাংলা সংস্কৃতির সকল বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়।
অভিভাবকদের সাথে কথা বলে বুঝা গেল সন্তানদের বিনামূল্যে এই প্রবাসে বাংলা সংস্কৃতি শিক্ষা দিতে পেরে তারাও অনেক আনন্দিত। অভিভাবকদের মধ্যে আবদুল হাই মামুন, বাবুল দাস, মোজাহিদ, মিহির কান্তি পাল, নাসরিন আক্তার মৌসুমী, নুপুর বিশ্বাস, একে এম আরিফসহ অনেকে শ্রদ্ধার সাথে সম্মান করেন জহুরুল কাইয়ুম বাহারকে, আর শিশুদের কাছে তিনি শিশু বন্ধু জহুরুল কাইয়ুম বাহার নামে পরিচিত।
তার দেশের বাড়ি নোয়াখালী সদর উপজেলার উজ্জ্বলপুর গ্রামে। পিতা মরহুম মৌলভী মোহাম্মদ সেরাজুল হক মিয়া পেশায় ছিলেন নোয়াখালী জজ কোর্টের প্রধান সেরেস্থা ও মাতা মোছাম্মদ জহুরুন্নেছা ছিলেন পেশায় শিক্ষিকা। পাঁচ ভাই দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় কাইয়ুম মূলত মায়ের কাছেই হয় তার চিত্রাঙ্কনের হাতে খড়ি। কুয়েতে কেপিটিসি কুয়েত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিতে প্রথম থেকে আজ অবদি কর্মরত আছেন। তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।
বিডি-প্রতিদিন/১৭ জুলাই, ২০১৬/মাহবুব