মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর অঙ্গরাজ্যের শাহ আলম জেলার কুয়ালা লাঙ্গাতের একটি নর্দমা থেকে বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার লাশটি উদ্ধার করে দেশটির জেলা পুলিশ। এরপরই রহস্য উদঘাটনের জন্য মাঠে নামে পুলিশ। রহস্য উদ্ঘাটন করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কেক ব্যবসার সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়েই মালয়েশিয়া প্রবাসী এক স্বদেশী খুন করে নিজ দেশীকে, যাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে অপর দুই বাংলাদেশিকে।
শাহ আলম জেলা পুলিশের প্রধান সহকারী কমিশনার শাফিন মামতের বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার সংবাদগুলো এ তথ্য জানিয়েছে। তবে নিহত ও গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি পুলিশ কর্মকর্তা শাফিন।
তিনি জানান, 'নিহত ব্যক্তির পরিচিতি শনাক্ত করার মত কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। তবে খুব শিগগিরই তার পরিচয় পাওয়ার আশা করছি। আমরা এখনও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছি।
তিনি আরও জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ওই বাংলাদেশি নিখোঁজ হন। নিখোঁজের তিনদিন পর তার নিয়োগদাতা স্থানীয় থানায় নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কে জানাতে ও প্রতিবেদন দাখিল করতে গেলে খুনের বিষয়টি প্রকাশ পায়। পুলিশ সাথে সাথে সন্দেহভাজন ও তার বাড়ির বাসিন্দাদের গ্রেফতার করে। এসময় তারা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বাংলাদেশির বস্তাবন্দি খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানায়, শাহ আলম জেলার সেকশন ২৭ এর আলম মেগার একটি বাণিজ্যিক এলাকায় গত ছয় মাস ধরে পাশাপাশি দোকানে দু'জন বাংলাদেশি কেক ব্যবসা করে আসছিলেন। তাদের একজন অন্যজনের চাইতে 'ব্যবসায় ভালো করা শুরু করলে' তাদের মধ্যে ঈর্ষা ও আক্রোশ তৈরি হয়।
আসামিরা তাদের স্বীকারোক্তিতে জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর পুলিশের হাতে আটক ব্যক্তি তার প্রতিপক্ষকে ফোন করে শাহ আলম এলাকার তামান মেগার একটি ফ্ল্যাটে নিমন্ত্রণ করে। পরে দুই বাংলাদেশি তাদের ব্যবসায়িক বৈঠকে বসলে বৈঠকের এক পর্যায়ে দু'জনের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। তখন একজন তার প্রতিপক্ষ বাংলাদেশির মাথায় হাতুড়ি দিয়ে সজোরে আঘাত করলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর রুমমেটদের সাহায্য নিয়ে লাশটিকে টুকরো করে ফ্ল্যাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কুয়ালা লাঙ্গাতের একটি নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়।
ঘটনাটিকে স্থানীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী খুনের ঘটনা হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে বলে শাহ আলম জেলা পুলিশ জানায়।
বিডি প্রতিদিন/২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭/আরাফাত