দেশের পর এবার আরব আমিরাতে মঞ্চায়িত হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নাটক ‘জনকের অনন্তযাত্রা’। প্রবাসে বিনোদনের নানান মাধ্যম থাকলেও মঞ্চ নাটকের রেওয়াজ বিরল। শুধু তাই নয়, নাটকটির অভিনয়, কলাকুশলী ও নেপথ্যের প্রায় সবাই প্রবাসী বাংলাদেশী। দেড় ঘণ্টা সময়কালের এই নাটকটি নিঃশব্দে উপভোগ করেছেন আমিরাতের বাংলাদেশি দর্শকরা।
নাট্যকার মাসুম রেজা রচিত এই নাটক প্রদর্শীত হলো আমিরাতে। দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সার্বিক তত্বাবধানে শনিবার রাতে শারজাহ মাসরা আল কাসবা অডিটোরিয়ামে নাটকটি মঞ্চায়ন করা হয়।
নাটকের দৃশ্যায়ন ও পটভূমি প্রবাসীদের হৃদয়ে দাগ কেটেছে। বাঙালি এখনও কাঁদে, এখনও অশ্রুশক্তি নয়নে জাতির পিতাকে স্মরণ করে। তিনি যে বাঙালির জাগরণের নেতা। পনের আগস্ট রাতের শেষ প্রহরে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ঘটে যায় ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড। ঘাতকের বুট ও বন্দুকের গুলির আওয়াজে প্রকম্পিত হয় জাতির পিতার বাড়ি। সপরিবারে নিহত হন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কালের বিবর্তনে যাতে এই মহানায়কের অন্তিম যাত্রার ঘটনা প্রবাহ বাঙালির স্মৃতি থেকে সরে না যায় সে জন্যই নির্মিত হয়েছে নাটক জনকের অনন্তযাত্রা।
৭৫ মিনিটের এই নাটকের ১৩টি দৃশ্যে ৪ জন অতিথি শিল্পীসহ অভিনয় করেছেন ১৮ জন শিল্পী। মঞ্চায়নের আগে প্রবাসী শিল্পীরা এই নাটকের অনুশীলনই করতে হয়েছে প্রায় চার মাস। দীর্ঘ অনুশীলনের পর সফল মঞ্চায়ন বলছেন শিল্পীরা। পিনপতন নীরবতায় নাটক উপভোগ করেন প্রায় তিন শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি।
বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন বলেন, ‘পনের আগস্টের মর্মান্তিক ট্রাজেডির পর জাতির পিতার মরদেহ টুঙ্গিপাড়ায় নেওয়ার ঘটনাকে উপজীব্য করে ও ঘটনাপ্রবাহকে অবলম্বন করে এই নাটকটি রচিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় মঞ্চায়ন শেষে এবার বিদেশের মাটিতেও এটির সফল মঞ্চায়ন হলো। জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড ও দাফন নিয়ে ইতিহাস বিকৃতকারীদের জন্য নাটকটি সঠিক জবাব দিচ্ছে। আমিরাত প্রবাসীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা হৃদয়ে নিয়ে নাটকটি দেখেছেন এবং আবেগাপ্লুত হয়েছেন।’
নাটকটির রচয়িতা ও নিদের্শক মাসুম রেজা জানান, ‘তথ্য, তত্ত্ব ও গবেষণার মাধ্যমে সাজানো হয়েছে জনকের অনন্তযাত্রা নাটকের গল্প। যে কারণে ইতিহাস হয়ে উঠেছে গল্প নির্ভর আর গল্পটি হয়েছে ইতিহাস নির্ভর।’
মাসুম রেজা বলেন, ‘এই যাবৎকাল বিদেশে আমার যত নাটক প্রদর্শিত হয়েছে তার রচিয়তা আমি ছিলাম। কিন্তু এবারই প্রথম বিদেশের মাটিতে নাটকের নিদের্শনা দিয়েছি। বিদেশে এই নাটকের মঞ্চায়নের পরে দর্শকদের এত সাড়া পাবে, মুগ্ধতা পাবে ভাবিনি। আমি ভীষণভাবে আপ্লুত। এই নাটকটি আমিরাতে অন্যকোনো প্রদেশে দেখাতে চাইলেও আমি অনুমতি দিবো।’
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল