মস্তিষ্কের দ্রুত বার্ধক্য এবং আলঝাইমারের মতো রোগের ঝুঁকির পেছনে মায়ের থেকে প্রাপ্ত এক্স ক্রোমোজোমের প্রভাব থাকতে পারে বলে একটি নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, মায়ের জিন থেকে প্রাপ্ত এক্স ক্রোমোজোম হিপোক্যাম্পাসের (যা শেখা এবং স্মৃতিশক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ) জৈবিক বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে।
নারীদের দুইটি এক্স ক্রোমোজোম (XX) এবং পুরুষদের একটি এক্স এবং একটি ওয়াই ক্রোমোজোম (XY) থাকে। এক্স ক্রোমোজোমে থাকা জিনের পরিবর্তন বা মিউটেশন মস্তিষ্কের বার্ধক্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে একটি এক্স ক্রোমোজোম প্রতিটি কোষে এলোমেলোভাবে নিষ্ক্রিয় হয়, যা জিনগত পরিবর্তনের কারণ হতে পারে।
গবেষণার সিনিয়র লেখক ডেনা ডুবাল বলেছেন, মানুষের মধ্যে এক্স ক্রোমোজোমের ভারসাম্যহীনতা খুবই সাধারণ। অনেক নারী মায়ের থেকে পাওয়া এক্স ক্রোমোজোমের প্রভাব বেশি বা কম বহন করেন, যা কেবল কাকতালীয়। তবে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে খুব কম গবেষণা হয়েছে।
গবেষকরা এই বিষয়টি পরীক্ষা করতে বিভিন্ন বয়সের স্ত্রী ল্যাব মাউস নিয়ে গবেষণা চালান। কিছু ক্ষেত্রে পিতার এক্স ক্রোমোজোম নিষ্ক্রিয় রেখে মায়ের এক্স ক্রোমোজোম সক্রিয় রাখা হয়। এসব মাউসের ফলাফল তুলনা করা হয় যেসব মাউসের মায়ের এবং পিতার এক্স ক্রোমোজোম সক্রিয় ছিল।
ফলাফলে দেখা গেছে, তরুণ ‘মম-এক্স’ মাউসগুলো সাধারণ মাউসের মতোই কগনিটিভ ক্ষমতা দেখালেও বয়স্ক মাউসগুলো দ্রুত মানসিক অবনতি প্রদর্শন করে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, মায়ের এক্স ক্রোমোজোমের কারণে হিপোক্যাম্পাসে বার্ধক্য ত্বরান্বিত হয়।
ডেনা ডুবাল বলেন, এই গবেষণার ফলাফল ইঙ্গিত দেয়, কিছু নারীর ক্ষেত্রে মায়ের এক্স ক্রোমোজোম বেশি সক্রিয় হওয়ার কারণে বার্ধক্যের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং আলঝাইমারের ঝুঁকি বাড়ে।"
গবেষণা যদিও মাউসের ওপর পরিচালিত হয়েছে, তবে গবেষকরা মনে করেন, এই ফলাফল মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলে বার্ধক্যজনিত মানসিক অবনতির কারণ খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। এতে করে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদেরও মস্তিষ্কের বার্ধক্য রোধের নতুন কৌশল উদ্ভাবনের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল