দুর্বৃত্ত হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের মিটিং শেষে ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে তার গাড়িতে অতর্কিত হামলা করে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে ক্যাম্পাস পার্শবর্তী শৈলকুপা থানার গাড়াগঞ্জের বড়দাহ নামক স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও গাড়ি চালক জানায়, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভা ছিল। উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী সভা ও ব্যাক্তিগত কাজ শেষে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে ঢাকা থেকে উপাচার্যের গাড়িতে (কুষ্টিয়া ঘ-১১০০২৮) ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এসময় তার গাড়িতে ছিলেন উপাচার্য ও তার ব্যক্তিগত সহকারী রেজাউল করিম রেজা। গাড়ির চালক ছিলেন মোঃ ফরহাদ হোসেন। গাড়ি ঢাকা থেকে ঝিনাইদহে আসে। ঝিনাইদহ পৌছানোর পর উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারীকে নামিয়ে গাড়ি ক্যাম্পাসে রওনা দিচ্ছিলেন। পথিমধ্যে রাত সাড়ে ৩ টার দিকে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার বড়দাহ নামক স্থানে পৌছালে রোডে গাছের গুড়ি ফেলিয়ে উপাচার্যের গাড়ির গতি রোধ করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তারা গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার সময় উপাচার্য ও চালক গাড়ি থেকে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে প্রাণে বেঁচে যায়। পরে ইবি থানার পুলিশ গিয়ে উপাচার্যকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেয়। হামলার সময় দুর্বৃত্তরা উপাচার্যের গাড়িতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে বলে জানিয়েছেন গাড়ি চালক ফরহাদ হোসেন। এতে গাড়ি কয়েকটি গ্লাস ভেঙে যায়।
উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, আমি সাধারণত ঢাকা থেকে এই রুট দিয়ে যাতায়াত করি না কিন্তু আমাকে যাতে কেউ ট্রেস করতে না পারে ও রেজাকে (উপাচার্যের পিএস) ঝিনাইদহে নামিয়ে দেয়ার জন্য গোয়ালন্দ ফেরিঘাট হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরছিলাম। প্রতিমধ্যে আকস্মিক হামলার শিকার হই। আমি কোন রকম জীবন নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর যখন তারা আবার আমাকে খুঁজে পায় তখন মনে হচ্ছিল আজ আমার দিনশেষ। আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমি ফিরে এসেছি।
এছাড়া ঘটনা বিচার দাবি ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়ে উর্ধতন প্রশানকে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী।
এবিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাটি জানানোর পর আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনা স্থলে গিয়ে উপাচার্যকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাসে পৌঁছে দিই। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ঘটনাটি শোনার সাথে সাথে আমি দুই জেলার পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। তাদের সহযোগীতায় উপাচার্য মহোদায়কে নিরাপদে ক্যাম্পাসে আনা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে পৃথক পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ইবি প্রেস ক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রমৈত্রীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন