৭ দিন নয়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা প্রদানের শর্তে প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের অবরোধ স্থগিত করেছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে উপাচার্য ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি মেনে নেন। পরে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের দিকে সাময়িক মহাসড়ক অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিকেল ৩টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আশ্বাস দিলে বিকেল ৪টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা ৭ দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের শর্তে আপত্তি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়ে ফের মহাসড়েক বসে পড়েন। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন নিজে মহাসড়কে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করান।
এসময় শিক্ষার্থীরা পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের সহপাঠীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের শর্তে অবরোধ তুলে নেয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শামিল হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান তমাল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শিক্ষার্থীরা ৭ দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানায়। তিনি পুলিশ প্রশাসনকে আরও দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
এর আগে, মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরীর রূপাতলী হাউজিংয়ের বিভিন্ন মেসে ঢুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে বেদম পিটিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এই হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের কর্নকাঠী এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।
এতে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। দুপুর ২টার দিকে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মোক্তার হোসেন একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। বিকেল ৩টার দিকে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর যান চলাচল শুরু হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই