গভীর রাতে মেসে ঢুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। গ্রেফতার হয়নি কোন হামলকারী। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে প্রক্টরিয়াল বডির আলোচনার পর সন্ধ্যায় মামলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রক্টর।
এদিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেয়ায় প্রায় ১০ মিনিট পরই অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
গত মঙ্গলবার রাতে নগরীর রূপাতলী হাউজিংয়ের মেসে মেসে ঢুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে ওই রাত থেকেই বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। বুধবার দিনভর অবরোধে এই মহাসড়ক পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর এবং একটি বাসের আগুন দেয় শিক্ষার্থীরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন ও উপাচার্যের সাথে শিক্ষার্থীদের আলোচনার প্রেক্ষিতে ৩ শর্তে ওইদিন বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের সময় অবরোধ সাময়িক স্থাগিত করে শিক্ষার্থীরা। দাবীগুলো ছিলো শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদান।
এই ঘটনার ১দিন পরও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় থানায় কোন মামলা হয়নি। গ্রেফতার হয়নি কোন হামলাকারী। এর প্রেক্ষিতে আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। তবে প্রায় ১০ মিনিট পর উপাচার্য ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হামলকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেয়ার পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিন) মো. মোক্তার হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস জানান, গত ২ দিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে উপাচার্য এবং সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে প্রক্টরিয়াল বডির আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় মামলাসহ আইনগত পদক্ষেপ নেবেন তারা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং হামলকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বরিশালে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। সংগঠনের জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে সকাল ১১টায় নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সাগর দাস আকাশের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বাসদের সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী, মহানগর ছাত্রফ্রন্ট সভাপতি প্রতিভা রায়, মহানগর ছাত্রফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন আহমেদ, প্রচার সম্পাদক বিজন সিকদার, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হাসিবুল ইসলাম।
সমাবেশে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। সমাবেশ শেষে ছাত্র ফ্রন্টের একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার