প্রিয় ক্যাম্পাসে সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করে ঢাকায় ফিরেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক জাফর ইকবাল।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া একটায় বেসরকারি একটি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তিনি সিলেট ত্যাগ করেন। ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১১ দিন চিকিৎসা নিয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে তিনি সিলেট যান। বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের যে মুক্তমঞ্চে তার উপর হামলা হয়েছিল সেই মঞ্চে বক্তব্য রাখেন। সন্ধ্যায়ও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাস ত্যাগের আগে জাফর ইকবাল আবারও কৃতজ্ঞতা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। হামলার পর তার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার যে ভালোবাসা দেখিয়েছে তা কখনো ভোলার নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাফর ইকবাল বলেন, যেভাবে আমার উপর হামলা হয়েছে তাতে খুব সহজে বেঁচে আসার কথা ছিল না। অসংখ্য মানুষের দোয়ার কারণেই আমি বেঁচে ফিরেছি। ক্যাম্পাসে ফেরার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা আমাকে অনেক চিঠি দিয়েছে। আমি সেগুলো পড়েছি। তাদের সেই ভালোবাসার প্রতিদান দেয়া আমার পক্ষে কোনদিনও সম্ভব হবে না। যেহেতু আমি নতুন জীবন পেয়েছি, তাই জীবনের বাকি সময়ে আমি যাতে ছেলেমেয়েদের জন্য ভালো কিছু একটা করতে পারি সে শক্তি ও সুযোগ যেন আল্লাহ আমাকে দেন।
নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, এ দেশের জন্য অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আমাদের দেশটা খুব সুন্দর। ওরা (নতুন প্রজন্ম) দেশটাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসুক, দেখবে দেশও ওদেরকে ভালবাসবে।
চলতি বছরের অক্টোবরে চাকুরি থেকে অবসরে যাওয়ার কথা জাফর ইকবালের। কিন্তু এরই মধ্যে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস ছেড়ে না যাওয়ার দাবি ওঠেছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে জাফর ইকবাল বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমার অবসর হয়ে গেলেও এটা আমার বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে আসলে কখনোই মনে হবে না আমি অন্য কোথাও এসেছি। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে আমি আছি কি-না সেটা বিষয় নয়, এটা আমার বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমৃত্যু এটা আমার বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মার্চ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে ফয়জুর রহমান ওরফে ফয়জুল হাসান নামের এক যুবক তার উপর ছোরা নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত জাফর ইকবালকে প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার মাথা, ঘাড় ও হাতে অস্ত্রোপচারের পর ওই রাতেই এয়ারএ্যাম্বুলেন্স যোগে তাকে ঢাকা সিএমএইচে পাঠানো হয়।
বিডি প্রতিদিন/১৫ মার্চ, ২০১৮/ফারজানা