শিবিরের এককালের দুর্গ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম কলেজে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান পালনকে কেন্দ্র করে বুধবার ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে দফায় দফায় সংর্ঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই ছাত্রলীগকর্মী আহত ও এক শিবিরকর্মী গণধোলাইয়ের শিকার হন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় শিবির সন্দেহে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে অর্ধশতাধিক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে শিবিরের হামলার খবর পেয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চকবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে র্যাব ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামে। পুলিশের সতর্ক অবস্থানের পরও চট্টগ্রাম কলেজের একটি ফটক ভেঙে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে হামলাকারীদের খোঁজ করে ছাত্রলীগ। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
চকবাজার থানার ওসি আজিজ উদ্দিন বলেন, ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অরিতরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে র্যাবও ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিকে আনার চেষ্টায় নামে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে অবস্থিত শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায়। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণের পর সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে একটি বিজয় র্যালি বের করে। ছাত্রলীগের সেই র্যালিতে শিবিরের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এক পর্যায়ে দু'পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে শিবিরের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগ কর্মীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়ে। শিবিরকর্মীরা একত্রিত হয়ে ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বের করে দিয়ে কলেজের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম কলেজের বিপরীতে সরকারি মহসিন কলেজের সামনে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে মহসিন কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর ইট-পাটকেল ছোঁড়ে শিবিরকর্মীরা। এ সময় দুই গ্রুপ ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় দুইঘণ্টা পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের পর নগরীর বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসে ঐক্যবদ্ধ হলে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের মূলফটকে শিবিরের দেওয়া তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় শিবিরের নেতাকর্মীরা ভিন্ন পথ দিয়ে পালিয়ে যায়। ছাত্রলীগের কর্মীরা তখন একজনকে শিবির সন্দেহে গণপিটুনি দেয়। এ সময় শিবিরকে সহযোগিতার অভিযোগ তুলে কলেজের নৈশপ্রহরীর ঘরে ভাংচুর চালায় ছাত্রলীগ।
এদিকে চকবাজার থানার ওসি আজিজ উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় বুধবার বেলা ৩টা পর্যন্ত অন্তত ৭০জনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে যাচাই-বাছাই করে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫/ রশিদা/এস আহমেদ