ওমান প্রবাসী রিনা বেগম (৪০)। দুই মাসের ছুটি নিয়ে নিজ বাড়ি নোয়াখালীতে এসেছিলেন। মঙ্গলবার ছুটি শেষ করে ওমান ফিরে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে আসেন তিনি। আর এখানেই ঘটে বিপত্তি। বিমানবন্দর স্টেশনে নামার পর মহাখালী যাওয়ার জন্য সিএনজি ভাড়া করেন। কিন্তু মহাখালী না গিয়ে বিমানবন্দরে আসেন ফ্লাইট শিডিউল জানার জন্য।
এ সুযোগটি গ্রহণ করে সিএনজি চালক। রিনা বেগম ও তার ছেলে রাসেল সিএনজি থেকে নেমে যাওয়ার মুহূর্তেই চালক সিএনজি নিয়ে চলে যান। কিন্তু রিনা বেগমের সকল মালপত্র থেকে যায় সিএনজির মধ্যেই। এ অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। উপায়হীন হয়ে সঙ্গে সঙ্গে আসেন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের কার্যালয়ে। পুলিশের কর্মকর্তাদের নিকট ঘটনার বিবরণ দেন তিনি।
কর্মকর্তারা তার নিকট চালকের নামসহ অন্যান্য বিষয় জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানাতে পারছিলেন না। এক সময় তিনি বলে উঠেন সিএনজির নম্বর আছে। তার দেয়া সেই নম্বরটি-ই নেন কর্মকর্তারা। নম্বর নিয়ে খোঁজ খবর নেয়া শুরু করেন। পরের দিন বুধবার রিনা বেগমের ফ্লাইট। সঙ্গত কারণে তার ছেলে রাসেল আসেন বিমানবন্দরে।
এদিকে সিএনজির ওই নম্বর দিয়ে খোঁজ করতে থাকে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের সদস্যরা। বুধবার বিকেলে বহির্গমন সিঁড়িতে কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্য ওই নম্বরের সিএনজি দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে সিএনজিটি আটক করে চালককে নিয়ে আসেন কার্যালয়ে।
এ সময় পুলিশের কর্মকর্তারা তার নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে চালক আব্দুল মালেক প্রথমে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করলে পুরো বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে চালক মালেক তিনিও স্বীকার করেন। পরবর্তীতে রিনা বেগমের ছেলেকে খবর দেন পুলিশের কর্মকর্তারা। এয়ারপোর্টে থাকা রাসেল ফোন পেয়ে দ্রুত চলে আসেন কার্যালয়ে।
পরে মালেক তার বাড়িতে খবর দিয়ে রিনা বেগমের সকল মালামাল ও ব্যাগে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা টাকা নিয়ে আসেন এবং রাসেলকে ফেরত দেন।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন শিমুল জানান, বিমানবন্দর যে এখন যাত্রী সাধারণের জন্য নিরাপদ তা আবারও প্রমাণিত হলো। ওই মহিলার সম্পূর্ণ লাগেজ ও টাকা আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ওই নারীর অভিযোগ পাওয়ার পর সহকারী পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকি পুলিশের বিভিন্ন শাখায় সিএনজির নম্বর দিয়ে বেতার বার্তা পাঠান। পাশাপাশি বিমানবন্দরে ওই নম্বরের সিএনজি আসে কি না তাও নজরদারি করতে থাকেন। সকাল থেকে নজরদারির এক পর্যায়ে আমরা সফল হয়েছি। তিনি জানান, সিএনজি চালককে বিমানবন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়।
বিডি-প্রতিদিন/৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব