সরকার চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সাথে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদেরও বিনামূল্যে ব্রেইল বই বিতরণ শুরু করেছে। ২০১০ সালে বেসরকারি উদ্যোগে চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে ব্রেইল বই তুলে দিতে আসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ. কে. খান ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন উৎস-এর পক্ষ থেকে সেদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রেইল বই দেওয়ার সময় ঘোষণা দেন 'পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০১১ সাল থেকে দেশের সকল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের হাতে ব্রেইল বই তুলে দেওয়া হবে।' মন্ত্রীর সেই ঘোষণার বাস্তব প্রতিফলন হতে সময় লেগে গেলো ৫ বছর। দীর্ঘ ৫ বছর পর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ব্রেইল বই সরবরাহ করা হলেও এখনও দেশের সকল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ব্রেইল পদ্ধতির বই পায়নি বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মূলত শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এর অধীনে ২০১৫ সালে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ি বাজেট ও ব্রেইল বই ছাপানোর উদ্যোগ নেয়। সেই অনুযায়ি দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৯ হাজার ৫৬৫ জন। কিন্তু ২০১৫ সালে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সরকারিভাবে ব্রেইল বই দেওয়া হয়নি। ২০১৫ সালের চাহিদা মোতাবেক ২০১৭ সালে সরবরাহ করতে গিয়ে বইয়ের সংকট দেখা দেয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ব্রেইল বই ছাপানোর ক্ষেত্রে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে সহায়তাদানকারি সরকারি প্রকল্প এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুওয়াই) এর অন্যতম পরামর্শক ভাষ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ব্রেইল বইয়ের ঘাটতি থাকার কথা নয়। কারণ সরকার চাহিদানুযায়ী সব ধরনের ব্রেইল বই ছাপানো ও বিনামূল্যে সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। যা অত্যন্ত প্রশংশিত একটি উদ্যোগ। তবে কোন প্রতিষ্ঠান যদি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আগেই তাদের চাহিদা পত্র না দিয়ে ব্রেইল বই পেতে চায়-তাহলে সেক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা দেবেই।
বিডি প্রতিদিন/১০ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল