নদীর গঙ্গাদেবীকে পূজার পর হ্রদে ফুল ভাসিয়ে করা হয় প্রার্থনা। আগামীর সুন্দর মঙ্গল দিন কামনা করে তারা। গতকাল এভাবে পালিত হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ফুল বিজুর উৎসব। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা কিংবা তঞ্চঙ্গ্যা সব সম্প্রদায় ফুল বিজুর উৎসব একইভাবে পালন করে। তবে ডাকে ভিন্ন ভিন্ন নামে। রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ শংকর ত্রিপুরা বলেন, ত্রিপুরা পল্লিতে ফুল হারি বৈসু পালন করা হয় গঙ্গা পূজা করে। পূজার ফুল নদীতে ভাসিয়ে উৎসবে মেতে ওঠে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী। ত্রিপুরাদের একটি বিশেষ নৃত্য হচ্ছে গড়ায় নৃত্য। গড়ায় নৃত্য করে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয় ত্রিপুরা। পুরোনো বছরের সব গ্লানি মুছে নতুন বছরে নতুন করে শুরু করে সবাই। অন্যদিকে রাঙামাটির শহরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিজু ফুল পালন করা হয়েছে। শহরের গর্জনতলী এলাকায় সকাল ১০টায় ফুল বিজুর উৎসব সূচনা করেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মো. রেজাউল করিম।
এ ছাড়া রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ি ঘাটে ফুল বিজু উৎসব সূচনা করেন রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়।
স্থানীয় ¯ন্ডেœহা চাকমা বলেন, ফুল বিজুর মধ্য দিয়ে আমাদের মূলত তিন দিনের বৈসাবি উৎসব শুরু হয়। ফুল বিজু, মুলবিজু ও গজ্জ্যাপজ্জ্যা। বছরের ঠিক শেষ ও শুরুর মুহূর্তে আমরা এ উৎসব পালন করে থাকি।
অন্যদিকে আবারও তিন দিনের বৈসাবি ঘিরে উৎসবের জোয়ারে ভাসছে রাঙামাটি। নানা উৎসবে মেতে উঠেছে পার্বত্যাঞ্চলের ১০ ভাষাভাষি ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। উৎসবে প্রাণ দিতে নাচে গানে মেতে উঠেছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা। চাকমাদের বিজু, ত্রিপুরাদের বৈসুক আর তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু উৎসবের পর্ব শেষ হলে শুরু হবে মারমাদের-সাংগ্রাইং। অর্থাৎ জলোৎসব। জলকেলির মধ্য দিয়ে মারমা ও রাখাইন জনগোষ্ঠী নতুন বছরকে বরণ ও পুরোনো বছরকে বিদায় জানায়।