‘পরিবর্তনের যুগে সৃজনশীলতার উৎকর্ষতা’ এই শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে অনুষ্ঠিত হলো নবম কমিউনিকেশন সামিট। এদিন কমিউনিকেশন সামিটের পাশাপাশি দেশের বিজ্ঞাপন শিল্পের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি কমওয়ার্ডের নবম সংস্করণ অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এবং বিপণন ও বিজ্ঞাপন সংস্থা থেকে আগত প্রায় ৩৫০ জন অতিথি অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে, কানস লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব ক্রিয়েটিভিটি- এর অংশীদারিত্বে এবং দ্য ডেইলি স্টারের পৃষ্ঠপোষকতায় কমিউনিকেশন সামিট এবং কমওয়ার্ড অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে ব্যবসা এবং বিপণনের সৃজনশীলতা প্রসারে কমিউনিকেশন সামিট সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম যেখানে দেশি-বিদেশি নামকরা সব বিজ্ঞাপন ও বিপণন বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সৃজনশীল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বহুদ‚র এগিয়ে গেছে। কিন্তু সমসাময়িক প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে বোঝা যায়, সৃজনশীল যোগাযোগ ব্যবস্থায় এখন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিমুখীকরণের পুনঃস্থাপন অত্যন্ত জরুরি। এবং এজন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার একান্ত প্রয়োজন।’
২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া কমিউনিকেশন সামিট বাংলাদেশের সৃজনশীল যোগাযোগ এবং বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে অনবদ্য অবদান রেখে আসছে। এ বছর সামিটে ম‚ল বক্তব্য রেখেছেন বিশ্বখ্যাত তিন জন সৃজনশীল যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ। সামিটে ছিল তিনটি ম‚ল প্রবন্ধ উপস্থাপনা, তিনটি প্যানেল আলোচনা, একটি ইন্টারঅ্যাকশন/ইন্টারভেনশন, তিনটি লোকাল ইনসাইট এবং তিনটি গ্লোবাল ইনসাইট।
সামিটে মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন টিজিএইচ কালেক্টিভের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার এবং এশিয়া প্যাসিফিক গ্লোবাল অ্যাডভাইসরির ক্রিয়েটিভ চেঞ্জ ক্যাটালিস্টের গুয়ান হিন; এফসিবি উল্কার ন্যাশনাল ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর স‚র্য দত্ত; এবং মার্কেটিং ফিউচারসের কো-ফাউন্ডার ও বিব্লিওসেক্সুয়ালের স্টোরিটেলার ডেভিড ম্যাকন।
প্যানেল আলোচনায় দেশের বিপণন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরাও অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন এমএসবি’র প্রেসিডেন্ট আশরাফ বিন তাজ; ব্র্যাক এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের কমিউনিকেশনস অ্যান্ড আউটরিচ ডিরেক্টর মৌটুসী কবির; মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ডিএমডি আসিফ ইকবাল; এফসিবি বিটপি’র সিওও সালাহউদ্দিন আহমেদ; ঢাকা আইসক্রিম লিমিটেডের (পোলার) সিওও শাহ মাসুদ ইমাম; গ্রে অ্যাডভারটাইজিং বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজিং পার্টনার ও কান্ট্রি হেড সৈয়দ গাউসুল আলম শাওন; অ্যাডকম লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নাজিম ফারহান চৌধুরী; এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েনশিয়াল মার্কেটিং লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইরেশ যাকের; মারকেটিং ফিউচারসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বিবিওসেক্সুয়ালের স্টোরিটেলার ডেভিড ম্যাকন; গ্রামীনফোন লিমিটেডের অপারেশনস ডিভিশনের হেড অব রিটেইল শারমিন রহমান; ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কেটিং ডিরেক্টর (হোমকেয়ার, ফুডস অ্যান্ড রিফ্রেশমেন্টস) তানজিন ফেরদৌস; ব্র্যান্ড ও কমিউনিকেশন প্রফেশনাল কনিষ্ক চক্রবর্তী (#দ্যাট); বাংলালিংকের ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর উরফি আহমাদ; এক্স’র সিওও এবং ডিরেক্টর দ্রাবিড় আলম এবং এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশনস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফেরদৌস হাসান নেভিল।
সামিটে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারঅ্যাকশন/ইন্টারভেনশন পরিচালনা করেন ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট ও পারফরমার, বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের ডিরেক্টর এবং উইমেন ইন লিডারশিপের (উইল) প্রেসিডেন্ট নাজিয়া আন্দালিব প্রিমা।
দিনব্যাপী এ কমিউনিকেশন সামিট শেষে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় কমওয়ার্ড- এর নবম আসর। এ আসরে দেশের সবচাইতে সৃজনশীল কাজগুলোকে গ্রাঁপ্রি, গোল্ড, সিলভার ও ব্রোঞ্জ এ চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয়। এ বছর মোট ২৩টি ক্যাটাগরিতে ৬৫৯টি কাজ জমা পড়েছিল; যাদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত সৃজনশীল কাজগুলো যথাক্রমে ৩টি গ্রাঁপ্রি, ১৫টি গোল্ড, ২৭টি সিলভার এবং ৩৬টি ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়। এছাড়াও, গ্রে বাংলাদেশকে ৬৬তম কান্স লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব ক্রিয়েটিভিটিতে ৩টি কান লায়ন্স জিতে নেওয়ার জন্য বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে, কানস লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব ক্রিয়েটিভিটির অংশীদারিত্বে আয়োজিত কমিউনিকেশন সামিট ও কমওয়ার্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলো দ্য ডেইলি স্টার। আয়োজনে আরো ছিলো স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার- বাংলাদেশ ক্রিয়েটিভ ফোরাম এবং রোরিং লায়ন্স; নলেজ পার্টনার – এমএসবি; টেকনোলজি পার্টনার – আমরা; রেডিও পার্টনার- রেডিও ফুর্তি; ডিজিটাল পার্টনার- অ্যাপ্লাইড বিজনেস ইনিশিয়েটিভস এবং পিআর পার্টনার- ব্যাকপেজ পিআর। '
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার