নারীদের জন্য বিনামূল্যে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য চালু করা হয়েছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। ডিজিটাল হেলথকেয়ার সলিউশানস (ডিএইচ) এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০ লাখেরও বেশি গ্রাহককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডাক্তারি পরামর্শ দিয়েছে।
শক্তি ফাউন্ডেশন মাইক্রো এবং এসএমই ফাইন্যান্সিং-এর মাধ্যমে ৫ লক্ষেরও বেশি নারীদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ও তাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছে। উদ্ভাবনী ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শক্তি ফাউন্ডেশনের ঋণগ্রহীতা ও তাদের বিভিন্ন কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডিএইচ ও শক্তি ফাউন্ডেশন ১ নভেম্বর থেকে একসাথে কাজ করা শুরু করেছে।
ডিএইচ এবং শক্তি ফাউন্ডেশন ১১টি শক্তি মেডিকেল কেয়ার সেন্টার (এসএমসিসি)-এ নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে সেগুলোকে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রূপান্তরিত করেছে এবং উন্নত মানের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে পরবর্তীতে আরও ৭০টি শক্তি মেডিকেল কেয়ার সেন্টারে একই উদ্যোগ নেয়া হবে। বর্তমানে, শক্তির ঋণগ্রহীতা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিনামূল্যে স্ত্রীরোগ, শিশু, চর্ম ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞসহ এমবিবিএস ডাক্তারদের সাথে আনলিমিটেড কল, চ্যাট ও ভিডিও কলের মাধ্যমে পরামর্শ নিতে পারছেন।
চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল পরামর্শ ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রদান করা হয় এবং রোগী পূর্ববর্তী চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এবং প্রেসক্রিপশন নিয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারেন। প্রয়োজন অনুযায়ী ডিজিটাল হসপিটালের চিকিৎসকরা স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে রোগীদের রেফার করে দেন এবং ডিজিটাল মাধ্যমে রোগীদের প্রেসক্রিপশন দেওয়ার সময় সেই প্রেসক্রিপশনেই রেফারেন্সের কথা উল্লেখ করা হয়।
সেবা কার্যক্রম শুরুর প্রথম ৩ দিনে ১০০ জনেরও বেশি সদস্যকে সেবা প্রদান করা হয়, যার মধ্যে ৩০ জন স্ত্রীরোগ এবং ২০ জন শিশুরোগ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের অ্যাপয়েনমেন্ট নিয়েছেন। এছাড়াও শক্তি এবং ডিএইচ, শক্তি ফাউন্ডেশনের সদস্যদের জন্য ‘ডিজিটাল হসপিটাল’ অ্যাপের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা চালু করেছে, যার মাধ্যমে তারা যেকোনো সময় ০৮ ০০০ ১১১ ০০০ (টোল ফ্রি) নম্বরে কল করে অথবা চ্যাট এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
তাছাড়া ডিজিটাল হসপিটাল থেকে শক্তি ফাউন্ডেশনের পাঁচ হাজার সদস্যদের নিয়ে নতুন হেলথ প্ল্যান এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এতে করে আনলিমিটেড ডক্টর অ্যাকসেস সহ ডিজিটাল হসপিটালের ‘আমরা সুরক্ষিত’ প্যাকেজ এর মাধ্যমে হাসপাতাল খরচের উপর সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে।
ডিজিটাল হেলথকেয়ার সলিউশানসের সিসিও অ্যান্ড্রু স্মিথ বলেছেন, ভিডিও কলের মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের জন্য উন্নত মানের চিকিৎসা ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ করতে ১১টি ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সময়ের সাথে সাথে আমরা নারীদের জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে প্রাথমিক পরীক্ষা ও রোগ সনাক্তকরণ, নিরাপদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং মানসম্পন্ন ওষুধের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য স্থান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি সেই গ্রামগুলোকেও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে তুলবো। কয়েক হাজার নারী ও পরিবারের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবায় এটি হবে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অফলাইন-অনলাইন মডেল।
আর এবিষয়ে শক্তি ফাউন্ডেশনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সময়ে যখন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল সার্ভিস প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। তখন শক্তি, ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে তার সুবিধা বঞ্চিত গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতকরণে প্রযুক্তির ব্যবহারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল হেলথকেয়ার সলিউশানসের সাথে আমাদের অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী নারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সাথে অনলাইন পরামর্শের দ্বারা মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ করাই আমাদের উদ্দেশ্য। প্রযুক্তির মাধ্যমে এভাবে নারীদের সুস্বাস্থ্য ও সামগ্রিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের একটি উদাহরণ।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর