শিক্ষক শব্দটি চিরকাল সব সমাজে শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত। কারণ তাঁরা শিক্ষিত-সৎ-আদর্শ প্রজন্ম সৃজনের কারিগর। পরবর্তী প্রজন্মকে জ্ঞানগরিমা, সভ্যতা-শিষ্টাচারে সমৃদ্ধ করতে তাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তাঁদের নিষ্ঠা, কঠোর পরিশ্রম ও চিরন্তন ইতিবাচকতা জাতি গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শিক্ষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা তাই সভ্যসমাজ কখনো অস্বীকার করে না। কবি কাদের নওয়াজের একটা বহুল পঠিত কবিতায়, বাদশাহ আলমগীরের এক উদারনৈতিক মনোভঙ্গির বর্ণনা আছে। যেখানে তাঁর সন্তান ওস্তাদের অজু করার সময় শুধু পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছে, হাত দিয়ে পা ধুয়ে দিচ্ছে না- দেখে তাঁকে তিরস্কার করেন সম্রাট পিতা। এমন আকাশছোঁয়া মর্যাদা একসময় সমাজে শিক্ষকদের সত্যিই ছিল। আজ আর নেই। হাতে গোনা দু-চারজন শিক্ষক ব্যক্তিগত সাধনা, পাঠদান, নীতি-আদর্শের কারণে অবশ্যই সর্বজনশ্রদ্ধেয়। কিন্তু অধিকাংশই তা হারিয়ে ফেলেছেন। সেজন্য বহু কারণ দায়ী। বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে- ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের দুঃখজনক অবনতি হয়েছে। দূরত্ব বেড়েছে যেন যোজন-যোজন। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শীর্ষ বিদ্যাপীঠ পর্যন্ত একই চিত্র। এক দিন যে শিক্ষাদান ছিল নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকের সাধনা, আজ তা দায়সারা পেশা এবং পাশাপাশি লাভজনক বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিতে জড়িয়ে ছাত্ররাজনীতির নামে ‘ছাত্রনং অধ্যয়নং তপঃ’ আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে হাজারটা অপকর্মে জড়িত হচ্ছে। বড়দের কাছ থেকে তারা মদত এবং বিপদে আশ্রয় পাচ্ছে। শিক্ষকদেরও একটা অংশ গবেষণা-পাঠ-পাঠদান পাশ কাটিয়ে দলদাসে পরিণত হয়ে পদোন্নতি ও সুযোগসুবিধার পেছনে ছুটছেন। ফলে স্বভাবতই শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সর্বসাধারণের মন থেকে আন্তরিক শ্রদ্ধার আসনটা হারাচ্ছেন। হারিয়েছেন। গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতি-দুঃশাসনে বিপর্যস্ত রাষ্ট্র সংস্কারে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এ সময়ও ক্ষমতাসীনদের দোহাই দিয়ে একটা হঠকারী মহল বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ দখল, শিক্ষকদের পদত্যাগ ও পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে ভেস্তে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ধস নেমেছে ছাত্র-শিক্ষক পারস্পরিক শ্রদ্ধা-স্নেহের সম্পর্কে। এসব কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। অবিলম্বে এ নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারে এ ক্ষেত্রেও করাত-কাঁচি-হাতুড়ি চালাতে হবে। বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
শিরোনাম
- আমেরিকায় নদীতে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৩
- ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি
- ঐশ্বরিয়ার কথাতেই থেমে যায় অভিষেকের রাগ
- বিএনপি আন্তরিকতার সঙ্গে সংস্কার কমিশনকে সহযোগিতা করছে : সালাহউদ্দিন
- চকবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্লাস্টিক কারখানার কর্মীর মৃত্যু
- ৭০তম জন্মদিনে মহাকাশ থেকে ফিরলেন আমেরিকার প্রবীণতম নভোচারী
- ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় নিষিদ্ধ ‘স্নো হোয়াইট’
- ‘বাবার মুখ পুড়িয়ে দিয়েছো’, প্রথম ছবির পর পরিবারের ক্ষোভ
- নতুন দুই বিচারপতিকে সংবর্ধনা দিল অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস-সুপ্রিম কোর্ট বার
- আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৯ জন ট্রাইব্যুনালে
- প্রতারণা, কনের বদলে বিধবা মাকে বিয়ে!
- বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে : আইন উপদেষ্টা
- পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষে যা জানাল ইরান
- ‘কেশরী চ্যাপ্টার টু’ দিয়েই কি অক্ষয়ের কামব্যাক?
- ২০০ মিয়ানমার নাগরিক পালিয়ে থাইল্যান্ডে এসেছে, দাবি থাই কর্তৃপক্ষের
- রহস্যময় 'পিরামিড' আবিষ্কার, বদলে দিতে পারে ইতিহাসকে
- নাইজেরিয়ায় সন্দেহভাজন পশুপালকদের হামলায় নিহত ১৭
- 'বেবি এবি'খ্যাত ব্রেভিসকে দলে নিয়েছে চেন্নাই
- ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে আমেরিকা
- জেমসের ‘চ্যাপ্টার টু’ কনসার্ট ডালাসে
ছাত্র-শিক্ষক দূরত্ব
শিক্ষা, শিষ্টাচারও ঠেলে দিচ্ছে দূরে
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর