ভিডিওটা গতকাল পেয়েছি, কিন্তু ফেসবুকের কারিগরি ত্রুটির জন্য ঠিক মতো দেখতে পারছিলাম না।
শুধু শুরুতে আফরান নিশোর ‘শালীর ঘরে শালী. একদম নড়বি না মাইরা ফেলবো..শালীর ঘরে শালী...’ পর্যন্ত প্লে হচ্ছিল। তাতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম!
বাংলা টিভি নাটকে এমন সংলাপ! কিভাবে সম্ভব? টিভির প্রিভিউ কমিটি থাকে, তারা দেখলো না? তারা কিভাবে ছাড় দিল এই সংলাপকে?
এরপর যখন পুরো ভিডিওটা দেখলাম, তাতে আরও অবাক হয়ে গেলাম। কি হচ্ছে এখনকার নাটকে?
‘কুত্তার বাচ্চা, চারটা বছর তুই আমাকে ইউজ করছোস, তারপর ছুড়ে ফেলে দিছোস...’
‘ধরাধরি করতে ভালো লাগতেছে? চল উপরে চল...ধরাধরি করি।’
এগুলো টিভি নাটকের সংলাপ! তার একদিন আগে আফরান নিশোর একটি স্ট্যাটাস দেখেছিলাম। তিনি সেখানে ব্যঙ্গ করে যা বলেছেন তার অর্থ হলো- টিভি নাটক নাকি শিক্ষার বিষয় না।
আফরান নিশোকে শুধু বলতে চাই, আপনার নিজের এসব সংলাপযুক্ত নাটক কি আপনি আপনার সন্তানের সামনে বসে দেখতে পারবেন? মানুষ সবকিছু থেকেই শিক্ষা নেয়। এটাই মানুষের চরিত্র। বিনোদন বলতে যা বুঝান, সেই বিনোদন থেকেও কিছু না কিছু মানুষ শিখে।
তার জন্যই কিন্তু বলা হয়, এমন অনেক কিছুই শিশুদের সামনে করা ঠিক না, যা থেকে তারা খারাপ কিছু শিখে।
টিভি নাটক হলো ড্রয়িং রুম মিডিয়া। একটি পরিবারের একদম মধ্যরুমে সবাই একসঙ্গে বসে টিভি দেখে। সেখানে এই ধরনের গালিগালাজ, অশ্লীল ইঙ্গিতপূর্ণ সংলাপ আসলেই ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
জানি না, কোন লেখক এসব সংলাপ লিখেছেন, আর কেমনই বা অভিনেতা অভিনেত্রী, তাদের বিবেক কি বিন্দুমাত্র বাধা দিল না এ ধরনের সংলাপ বলতে!
নাকি তারা নিজেরাই নিজেদের ইচ্ছে মতো বলে গেছেন, বাস্তব চরিত্রের মতো! কারণ আজকাল তো আর স্ক্রিপ্ট লাগে না নাটকের জন্য। যা খুশী বলে দিলেই হচ্ছে।
নাটকের এই পরিস্থিতির জন্য নাট্যকার, পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী, টিভি কর্তৃপক্ষ সবাই দায়ী। নাট্য নির্মাতা হিসেবে আমি বড়ই লজ্জিত।
লেখক: নাট্য পরিচালক
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/০৪ জুলাই, ২০১৯/আরাফাত