যখন ছোট ছিলাম আমার আব্বা কোথাও কারো সাথে বেড়াতে যেতে দিতে চাইতেন না। এটা নিয়ে আমাদের মনে অনেক হাহাকার ছিল। আশেপাশের সবাইকে দেখতাম সিনেমা দেখতে যাচ্ছে কাজিনরা মিলে, বা মামার বাড়ি, ফুফুর বাড়ি যাচ্ছে। আমার আব্বার একটাই কথা ছিল আমি তোমাদের যখন নিয়ে যাবো তখন যাবে। তখন না বুঝলেও আস্তে আস্তে বুঝা শুরু করি চারপাশটা আসলে আমাদের মেয়েদের জন্য ততটা নিরাপদ নয় যেটা মুরুব্বিরা বুঝতেন।
অনেক কিছুতেই বাধা পেতাম। তাই বলে বর্তমান অবস্থার মতো এতটা অনিশ্চিত আর নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি কখনই কল্পনা করিনি। প্রতিদিন কোনো না কোনো খারাপ খবর, ধর্ষণ... শিশু ধর্ষণ, হত্যা। অসুস্থ হয়ে যাই খবর পড়লে আর ফেসবুক খুললে। চারপাশে শুধু প্রতারক, যৌন নিপীড়নকারী আর খুনিতে ভরে গেছে।
চিকিৎসক, শিক্ষক, ধর্মীয় শিক্ষক থেকে শুরু করে বাসার দারোয়ান, কাজের লোক কেউই আর বিশ্বস্ততার মধ্যে পড়ে না। কী ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি। বিদ্যালয়, কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ এমনকি নিজের বাড়ির ভিতরও মেয়েরা নিরাপদ নয়। কী অসুস্থ দেশে পরিণত হচ্ছে আমার দেশটা। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী... সেই দেশে নারী শিশুরা এতটা অনিরাপদ বা এত এত ধর্ষণ, হত্যার শিকার হচ্ছে লাগাতারভাবে, এটা মেনে নেয়া যায় না। অবিলম্বে কঠোর কোনো আইন বা পদক্ষেপ নেয়া উচিত সরকারের।
আহা ওয়ারির বাচ্চাটার দিকে তাকালে দম বন্ধ হয়ে আসে। কীভাবে মানুষ পারে এমন নির্মম-নিষ্ঠুর আচরণ করতে। কী বীভৎস আর বিকৃত মানুষের মন মানসিকতা, কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এদের একটাই সাজা হওয়া উচিত ফাঁসি, ফাঁসি এবং ফাঁসি।
আল্লাহ তুমি রহম করো আমাদের দেশটাকে, দেশের মানুষকে।
#সতর্কতা
মেয়েকে স্কুল সাথে নিয়ে যাবেন স্কুল বাস বা গাড়িতে এ দিবেন না
কোচিং যাবে সাথে যাবেন
স্কুলে অপেক্ষা করে মেয়ের ছুটি হলে তাকে নিয়ে বাসায় ফিরবেন।
দারোয়ান এর সাথে কোথাও পাঠাবেন না।
মেয়ে নাচ বা আর্ট ক্লাশ এ যাবে সাথে যাবেন
ডাইভার বা কাজের ছেলের সাথে দিবেন না
হুজুর থাকলে সামনে বসে থাকবেন
মেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের বাচ্চাদের সাথে খেলতে যাবে সাথে থাকবেন
বাচ্চারা রাগ করলেও একা ছাড়বেন না
যতোই পরিচিত আত্মীয়স্বজন হোক তাদের কাছে মেয়েকে একা ছাড়বেন না হোক সেটা মামা, চাচা, খালু, ভাই
৯ মাস এর বাচ্চা থেকে ১৪০ বছর বুড়ি ও ছাড় পায় না কারণ আমরা নারী
কোথাও নিরাপত্তা নাই আমাদের (সংগৃহীত)
লেখক: অভিনয়শিল্পী
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা