‘পাইরেসি’
একটা সিনেমা মুক্তির পরপরই যদি পাইরেসি হয়ে যায় তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রযোজক। আর সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি।
কারণ ওই ছবিটি যখন দর্শক্রীয়তা পেতে থাকে তখন অন্যান্য প্রযোজকরা বিভিন্ন লেখকদের নতুন সম্ভাবনার গল্প নিয়ে মেধাবী পরিচালকদের দায়িত্ব দেন নতুন নতুন সিনেমা বানানোর। শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। এক এক করে শত শত হাজার হাজার পরিবার কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর ‘পাইরেসি’ শুরু হলে সেই সম্ভাবনার দরজা বন্ধ হয়ে যায়।
শুনলাম ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত দর্শকপ্রিয় একটি চলচ্চিত্র পাইরেসির কবলে পড়েছে। সংবাদটি দুঃখজনক, আশঙ্কাজনক। এই পাইরেসির কবলে পড়ে আমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম ২০০৯ সালে ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’ মুক্তির পর।
৩৫ এম এম এ নির্মিত চলচ্চিত্র ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’ সারা বাংলাদেশের ২৯ টি সিনেমা হলে একযোগে মুক্তি পেয়ে প্রথম দিন শুক্র বার প্রতিটি হলে ৪ টি করে মোট ১১৬ টি শো হাউস ফুল যায়। তারপর- শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত মুশলধারে বৃষ্টি।
রাজশাহী, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলার সিনেমা হলের সামনে হাঁটু পরিমান পানি থাকায় দর্শকদের হলে আসাতে বাধা তৈরি হয়। পরবর্তীতে যখন দর্শক ফেরা শুরু করে ঠিক সেই মুহূর্তে পাইরেসির শিকার হয় ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’। সারা বাংলাদেশের ভি সি ডি ডিভিডির দোকানে ছড়িয়ে পড়ে নিমিষেই। সুপার হিট হওয়ার পরেও বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই আমি সহ আমরা।
আমি এবং প্রযোজক সমিতির নেতা বড় ভাই ‘খোরশেদ আলম খসরু’ ভাই র ্যাব ২ এর সহযোগিতা নিয়ে এক ট্রাক ভিসিডি ডি ভিডি উদ্ধার করি। এরেস্ট করা হয় ৬ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে। তৎকালীন সময়ে পাইরেসি করার মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এতে করে আমার এবং আমার পার্টনারদের মত কত প্রযোজকের যে কি পরিমাণে ক্ষতি হয়েছিল তা বলে বোঝাতে পারবো না।
কাজেই আমি জানি পাইরেসি সিনেমা এবং ইন্ডাস্ট্রির কত ক্ষতি করে। এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে পাইরেসির সাথে জড়িত নব্য চোরদের বিরুদ্ধে। নইলে আবারও সর্বনাশ।
লেখক : এস এ হক অলীক, চলচ্চিত্র নির্মাতা
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল