বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক শুল্ক আরোপের ঘোষণায় টালমাটাল হয়ে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এ শুল্কনীতি বিশ্বকে মন্দার দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদি এ পরিস্থিতি সঠিকভাবে সামলানো না যায় তবে মন্দার চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
গত রবিবার এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমদানি করা সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক হার ঘোষণা করবেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ প্রতিশ্রুতির অর্থ হচ্ছে- চীন থেকে আমদানি করা স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের ওপর দেওয়া শুল্ক ছাড় আর বেশি দিন থাকছে না। ট্রাম্প মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর খাতকে আরও শক্তিশালী করতে চাচ্ছেন। সোমবার ফেডারেল রেজিস্টারের ফাইলিংয়ে দেখা গেছে, ওষুধ এবং চিপসের বিদেশি উৎপাদনের ওপর ব্যাপক নির্ভরতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি- এমন যুক্তিতে ট্রাম্প প্রশাসন উভয় ক্ষেত্রেই শুল্ক আরোপের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টর আমদানির বিষয়ে তদন্ত শুরু করছে।-এএফপি
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৯৬২ সালের বাণিজ্য সম্প্রসারণ আইনের ২৩২ ধারার সর্বশেষ ব্যবহারকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তথাকথিত খাতভিত্তিক শুল্কের ন্যায্যতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আগে সেমিকন্ডাক্টর আমদানির ওপর শিগগির শুল্ক আরোপ করা হবে বলে জানান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্প। আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে স্পষ্ট ঘোষণা আসতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা চিপ, সেমিকন্ডাক্টর ও অন্যান্য জিনিস আমাদের দেশেই তৈরি করতে চাই। স্মার্টফোনের মতো কিছু পণ্য এখনো অব্যাহতিপ্রাপ্ত হতে পারে কি না তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, আপনাকে একটি নির্দিষ্ট নমনীয়তা দেখাতে হবে। কারও এত কঠোর হওয়া উচিত নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা এক পোস্টে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমরা আসন্ন জাতীয় নিরাপত্তা শুল্ক তদন্তে সেমিকন্ডাক্টর ও পুরো ইলেকট্রনিক্স সরবরাহ শৃঙ্খলের দিকে নজর দিচ্ছি। ট্রাম্প গত শুক্রবারের ঘোষণা ঘিরে তৈরি হওয়া গুজব উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, শুল্কের ক্ষেত্রে কোনো দেশই রেহাই পায়নি। এমনকি চীনা ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ শুল্ক এখনো বহাল রয়েছে, তবে সেগুলো এখন ‘ভিন্ন শুল্ক শ্রেণি’তে রাখা হয়েছে। এর আগে তিনি চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করছেন। তবে তার প্রশাসন পরে জানায়, এই ১২৫ শতাংশের সঙ্গে আগে থেকে আরোপিত ২০ শতাংশ শুল্কও যুক্ত থাকছে। ফলে মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ১৪৫ শতাংশে।