পঞ্চম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনে ৫৩ শতাংশ ভোট জালিয়াতি হয়েছে বলে দাবি করেছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ’।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। এ ছাড়া ৫০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা হয়েছে, ৭৬ শতাংশ ভোটারকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, ২০ শতাংশ ভোটারকে ভোট প্রদানে বাঁধা দেওয়া হয়েছে, ৫৯ শতাংশ পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং ৩৮ শতাংশ পর্যবেক্ষককে গণনা পর্যবেক্ষণ করতে দেওয়া হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ’-এর পরিচালক মো. আবদুল আলীম জানান, এটি শুধু পঞ্চম পর্যায়ের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রাথমিক বিবৃতি। এবারের পর্যবেক্ষণে বিবেচনার বিষয় ছিল ভোটকেন্দ্র প্রস্তুতকরণ, খোলার সময়কাল, ভোট গ্রহণ কার্যক্রম, ভোট গ্রহণ কার্যক্রমের সমাপ্তি ও ভোট গণনা এবং কেন্দ্রের ভেতরের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ।
আবদুল আলীম বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটদানের গড়হার ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ বলা হলেও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে আমরা মনে করি, জাল ভোট ও অনিয়মের কারণে এই পরিসংখ্যানে ভোট প্রদানের প্রকৃত হারের প্রতিফলন ঘটেনি।
ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ও জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফা থেকে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। তৃতীয় দফায় সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যায়। চতুর্থ দফায় নতুন নতুন কৌশল করে জাল ভোট দেওয়া হয় ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ পঞ্চম দফায় সহিংসতা কম হলেও জাল ভোট দেওয়ার জন্য অভিনব কৌশল প্রয়োগ করতে দেখা গেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষকদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় তিনটি ভোটকেন্দ্রে ব্যালট বাক্সের মধ্যে আগে থেকে বিপুলসংখ্যক ব্যালট পেপার ভরা ছিল। ওই বাক্সগুেলো ভোট গ্রহণে ব্যবহার করা হয়েছে।
কলিম উল্লাহ জানান, লক্ষ্মীপুর সদর, সাতক্ষীরা সদর ও টাঙ্গাইল উপজেলায় বেশ কিছু ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের কক্ষের ভেতরে নিয়ে গিয়ে আঙুলে কালি লাগানো হয়। এরপর তাঁদের ভোট না দিয়ে চলে যেতে বলা হয়। কারণ জানতে চাইলে ভোটারদের বলা হয়, তাঁদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। অন্যদিকে বেলকুচি উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই এক প্রার্থীর সমর্থকেরা কেন্দ্রে প্রবেশ করে নিজেরাই ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দেন।
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন অরাজনৈতিক হলেও প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজনীতির প্রভাব দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শৈথিল্য ছিল উদ্বেগজনক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য হারুন অর রশীদ, এ এইচ এম নোমান প্রমুখ।