আসামিকে গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে হাজির করার আগে সংবাদমাধ্যমের সামনে না আনা বন্ধে পুলিশ প্রধানকে নির্দেশনা দিতে বলেছে হাইকোর্ট। ২০০৯ সালে গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের সময় গ্রেফতার জেএমবি সদস্যের বোমা বিস্ফোরণে সাংবাদিক ও পুলিশ আহতের ঘটনোর মামলার রায় প্রদানকালে এই কথা বলা হয়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ এই অভিমতসহ রায় দেয়। রায়ে জেএমবি সদস্য মো. মামুনুর রশিদ ওরফে জাহিদকে নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ‘দায়িত্ব পালনে উদাসীন ছিলেন’ পর্যবেক্ষণ দিয়ে পুলিশ প্রধানকে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে হাইকোর্ট।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মামুনুর রশীদ জাহিদসহ জেএমবির চার সদস্যকে গ্রেফতার করে টঙ্গী থানার পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি দেশে তৈরি গ্রেনেডসহ বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি প্রচারের জন্য ওইদিন বিকালে গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় আসামি জাহিদকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় সাংবাদিকের সামনে আনা হয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেএমবি সদস্য জাহিদ টেবিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং একটি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান। এতে সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জন গুরুতর আহত হয়।
ওইদিন রাতে এই জেএমবি সদস্যের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। মামলার বিচার শেষে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। পরবর্তীতে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মামুন। শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।
বিডি-প্রতিদিন/১০ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব