শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, সরকার বার বার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও কিছু সংখ্যক শিক্ষক প্রশ্নপত্র ফাঁসে সরাসরি জড়িত। এজন্য এবার আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষক প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার চাকরি থাকবে না। এমনকী সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র থাকবে না এবং ওই স্কুলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেয়া হবে।
জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রবিবার প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক প্রশ্নপত্র ফাঁসকে প্রযুক্তির উন্নয়নের সমস্যা হিসেবে অবহিত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির কারণে কিছু শিক্ষক মোবাইল ফোন বা অন্যান্য কিছু ব্যবহার করে তারা আগে প্রশ্নপত্র খুলে এটা প্রচার করে দেয়। এতে তারা অর্থ রোজগারের পাশাপাশি সরকারকে বেকাদায় ফেলতে চান। এমন কিছু সংখ্যক শিক্ষক, যারা আমাদের সন্মান নষ্ট করছে, সার্বিক সমস্যার সৃষ্টি করছে। আমরা একটা ব্যবস্থা নিলে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে। এবার কঠোর অবস্থা নেওয়ার কারণে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা এবার আরো কঠোর অবস্থান নিয়েছি। আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি, কোনোভাবে কাউকে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে সেই শিক্ষকের চাকরি থাকবে না। ওই স্কুলের কেন্দ্র বাতিল হবে, এমনকী স্কুল বাদ দিতে পারি। এছাড়া কোন ধরণের মোবাইল ফোন কেউ হলের আশপাশে নিতে পারবে না। এটা আগেই সিদ্ধান্ত ছিল, এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছি। এবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে গিয়ে সিটে বসতে হবে, তারপর খাম খোলা হবে। এটা পর্যবেক্ষণের জন্য মোবাইল টিম করে দিয়েছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় যখন তখন গিয়ে হাজির হবে এই মোবাইল টিম।
তিনি আরও বলেন, এখন বিজিপ্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁসের কোন সম্ভবনা নেই বা হয়ও না। সমস্যা হচ্ছে আমরা যখন পরীক্ষার দিন সকাল বেলায় বিভিন্ন সেন্টারে প্রশ্ন পাঠাই। দূর, দূরান্তের স্কুল গুলোতে দুই ঘণ্টা, চার ঘণ্টা আগে পৌঁছে দেওয়া হয়। এখন দেখা যাচ্ছে যাদের হাতে পৌছে দেই, যেখানে আমাদের নিরাপদ ভাবা উচিত, সেখান থেকে কিছু সংখ্যক শিক্ষক তারা সরাসরি যুক্ত।
দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৩১ লাখ
সাংসদ দিদারুল আলমের (চট্টগ্রাম-৪ )এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, দেশে মোট ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩১ লাখ ৫০ হাজার ৪০৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে
সাংসদ এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১)এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দেশের প্রতিটি জেলায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলের জন্য উচ্চ শিক্ষার পথ সুগম করতে এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সরকারের বর্তমান মেয়াদে ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশে ৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে এবং ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ জানুয়ারি, ২০১৮/মাহবুব