এক সময় মোবাইল ফোনের ব্যবহার ছিল সীমাবদ্ধ। এখন সবার হাতে হাতেই চলে এসেছে স্মার্টফোন। সাধারণ ধারণার চেয়ে বরং বিপরীতভাবে স্মার্টফোনের ব্যবহার আপনাকে সামাজিকভাবে আরও নিঃসঙ্গ করে তুলতে পারে। আপনার লিঙ্গ পরিচয় বা সেল ফোন ব্যবহারের অভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে তা আপনাকে পরিবার ও বন্ধুদের থেকে বরং আরও বিচ্ছিন্ন করতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এমনটিই দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১৮-২৯ বছর বয়সী ৪৯৩ জন শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। জরিপে সেল ফোন ব্যবহারের সঙ্গে বাবা-মা এবং বন্ধুদের সঙ্গে সামাজিকভাবে সংযুক্তির অনুভূতির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হয়। জরিপের ফলাফলে নারী ও পুরষদের মাঝে এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে।
নারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা প্রতিদিন গড়ে ৩৬৫ মিনিট ফোন ব্যবহারে ব্যয় করেন। আর গড়ে ২৬৫টি এসএমএস প্রেরণ ও গ্রহণ করেন। আর প্রতিদিন অন্তত ছয়টি কল করেন বা রিসিভ করেন।
পুরুষ শিক্ষার্থীরা অবশ্য তাদের ফোনে আরও কম সময় ব্যয়ের কথা বলেছেন। তারা প্রতিদিন গড়ে ২৮৭ মিনিট সময় ফোনে ব্যয় করার কথা এবং ১৯০টি এসএমএস গ্রহণ ও প্রেরণের কথা জানান। আর পুরুষরাও প্রতিদিন অন্তত ৬টি কল করা এবং রিসিভের কথা জানান।
কম্পিউটার ইন হিউম্যান বিহেভিওর জার্নালে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা মূলত বাবা-মার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। আর বন্ধুদের সঙ্গে এসএমএস বিনিময় করেন। তবে পুরুষদের বেলায় বিপরীতটাই সত্য। প্রতিদিন খুদে বার্তা বিনিময় এবং ফোনে কথা বলার বিষয়টি বাবা-মার সঙ্গে বা বন্ধুদের সঙ্গে আবেগগত বন্ধনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।
তবে গবেষণায় দেখা গেছে, নারী-পুরুষ উভয়েই সেল ফোন ব্যবহারের ফলে বাবা-মা ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক আবেগে আক্রান্ত হন। গবেষণায় আরও দেখা যায়, পুরুষদের চেয়ে নারীদের জন্য ফোনের সামাজিক মূল্য অনেক বেশি। আর নারীরা বিদ্যমান সামাজিক সম্পর্কগুলোকে ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে আরও বেশি শক্তিশালি করতে বেশি সক্ষমতা প্রদর্শন করছেন।
সেল ফোনের অন্যান্য সকল কার্যকারিতার কথা বিবেচনায় নিলে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগই আর সেল ফোনের কেন্দ্রীয় উদ্দেশ্য থাকবে না। এর মধ্য দিয়ে আরও অর্থপূর্ণ মানবিক সম্পর্ক তৈরি হবে। উদাহরণত, উভয় লিঙ্গের মুখোমুখি যোগাযোগ স্থাপন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
বিডি প্রতিদিন/১৯ আগস্ট ২০১৬/হিমেল-১৮