লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সোমবার দুপুর ১২টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে করে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আসেন ৪৭জন লন্ডন প্রবাসী। এরমধ্যে ৪১জন লন্ডন প্রবাসী সিলেটের বাসিন্দা। সরকারের নির্দেশনা জারি করার পর এই প্রথম ৪১জন যাত্রীকে জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত হোটেল স্টার প্যাসিফিক ও হোটেল হলি গেইটে রাখা হবে।
এদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই দুটি হোটেলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হোটেলের নিজস্ব নিরাপত্তার পাশাপাশি পুলিশও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। আর সার্বিক বিষয় তদারকি করবে জেলা প্রশাসন।
হোটেল স্টার প্যাসিফিক জানায়, লন্ডন থেকে আগত যাত্রীদের জন্য তাদের হোটেলের পুরো চতুর্থ তলা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হোটেলের নিয়ম অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন সকালের নাস্তা ফ্রি খাওয়াবে। আর দুপুর ও রাতের খাবার প্রবাসীদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের কক্ষে সরবারহ করা হবে। খাবারের বিল ও হোটেল কক্ষের বিল প্রবাসীরা পরিশোধ করতে হবে। এই হোটেলের সিঙ্গেল বেডের কক্ষের ভাড়া ৪ হাজার ও ডাবল বেডের কক্ষের জন্য ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন হোটেল স্টার প্যাসিফিকের ফ্রন্ট অ্যাকাউন্টসের জয় দেব বলেন, আমরা প্রবাসীদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করেই হোটেলের চতুর্থ তলা নির্ধারণ করে রেখেছি। ইতিমধ্যে আমাদের হোটেলে পুলিশের নিরাপত্তা রয়েছে। সেই সাথে আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরাও কাজ করবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসীরা হোটেলের কক্ষ থেকে তারা খাবার থেকে শুরু করে যেসব সুবিধা চান তা আমাদের ফোনে জানালে আমরা তা ব্যবস্থা করব। সকালের নাস্তা তাদের জন্য ফ্রি থাকবে। খাবারগুলো তাদের কক্ষে পৌঁছে দিবে আমাদের হোটেলের লোকজন।
হোটেল হলি গেইট কতৃপক্ষ জানিয়েছে, লন্ডন থেকে আগত প্রবাসীদের জন্য পুরো হোটেল খালি রয়েছে। তারা যে যেখানে চান সেখানে থাকতে পারবেন। সকালের নাস্তা প্রবাসীদের কক্ষে ফ্রি দেয়া হবে। এছাড়াও দুপুর ও রাতের খাবার চাহিদা অনুযায়ী কক্ষে সরবরাহ করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হোটেল গলি গেইটের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শেখর ঘোষ বলেন, প্রবাসীরা হোটেল আসার পর তাদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দেয়া হবে। সকালের নাস্তা ফ্রি দেয়া হলে দুপুর ও রাতের খাবার এবং হোটেলের ভাড়া তাদের পরিশোধ করতে হবে।
সিঙ্গেল ও ডাবল কক্ষের ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হোটেলের যে ভাড়া নির্ধারণ আছে তা পরিশোধ করতে হবে। সেই সাথে খাবারের বিলও। হোটেলের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন।
সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (কোভিড-১৯) শামমা লাবিবা অর্ণব বলেন, সিলেটের যে দুটি হোটেলে প্রবাসীদের রাখা হবে সেখানে হোটেলের নিজস্ব ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা বাহিনীসহ পুলিশেরও একটি বাহিনী থাকবে। যাত্রীরা যাতে হোটেলের বাইরে না যেতে পারেন এবং হোটেলে যাতে তাদের স্বজনরা প্রবেশ না করেন তা তদারকি করতে হোটেলগুলোর সামনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, বিমানবন্দরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। সেই সাথে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। বিমানের ফ্লাইটে করে সিলেটে এসেছেন ৪৭জন যাত্রী। এরমধ্যে সিলেটে নামবেন ৪১জন ও ঢাকায় চলে যাবেন আরও ৬জন। সিলেটের যাত্রীদেরকে বিআরটিসি বাসে করে নিরাপত্তা দিয়ে হোটেলে নেয়া হবে।
ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জতিক বিমানবন্দরে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট আসে। সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২ জন, গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২ জন এবং ৩১ ডিসেম্বর ২৩৭ যাত্রী নিয়ে বিমানের তিনটি ফ্লাইট ওসমানী বিমানবন্দরে আসে। এই তিনদিন আসা যাত্রীদের মধ্যে যথাক্রমে ১৬৫, ১৪৪ ও ২০২ জন ছিলেন সিলেটের যাত্রী। বাকিরা ঢাকায় চলে যান।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত