রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা থেকে আমেরিকা সরে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেন, “মস্কো বা কিয়েভ যদি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানো ‘খুব কঠিন’ করে তোলে, তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনা আরও এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকা সরে যাবে।”
শুক্রবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, “নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হবে বলে আশা করিনি। তবে আমি চাই এটি ‘দ্রুত’ সম্পন্ন হোক।”
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর এ সংক্রান্ত সতর্কতার কয়েক ঘণ্টা পর এই মন্তব্য করলেন ট্রাম্প।
রুবিও সতর্ক করে বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে অগ্রগতির স্পষ্ট লক্ষণ না হলে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তিচুক্তির মধ্যস্থতার চেষ্টা বন্ধ করে দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই সতর্কবার্তা দেন রুবিও।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বন্ধে সহায়তা করতে চায়। তবে এ বিষয়ে যদি তাৎক্ষণিক কোনও অগ্রগতি দৃশ্যমান না হয় তাহলে তারা এই পদক্ষেপ থেকে সরে দাঁড়াবে। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ সময় এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে না।
রুবিও বলেছেন, আমরা সপ্তাহ বা মাসের পর মাস ধরে এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব না। কেননা, যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ দেওয়ার মতো আরও অনেক বিষয় আছে।
ইউক্রেন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কিয়েভের একটি খনিজ চুক্তিতে স্বাক্ষরের প্রথম পদক্ষেপ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর এই মন্তব্য করলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে রুবিও বলেন, আমাদের এখন দ্রুত এসব পদক্ষেপ নিতে হবে। আমি কয়েকদিনের মধ্যে বা স্বল্পমেয়াদে এ বিষয়টি সম্ভব কিনা সেটার কথা বলছি। যদি এমনটি না হয় তাহলে আমরা সামনে অগ্রসর হব।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যদিও একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানো কঠিন বিষয়; তবে আমরা চাই যে এটা দ্রুত হোক।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্র একটি স্মারকলিপি স্বাক্ষর করার পর এই মন্তব্য সামনে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে একটি বিনিয়োগ তহবিল প্রতিষ্ঠা করতে চায় উভয় দেশ। ২৬ এপ্রিল থেকে এই চুক্তিটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। নথিতে খনিজ সম্পদ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।
তবে আগে ফাঁস হওয়া এক নথি থেকে জানা যায়, চুক্তিটি ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের সঙ্গে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো, সেই সঙ্গে তেল ও গ্যাসের নিয়ন্ত্রণ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। ভবিষ্যতে যেকোনও যুদ্ধবিরতি সমর্থন করে কিয়েভকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের বিরোধিতা করে আসছে ওয়াশিংটন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, একটি মুক্তি, সার্বভৌম এবং নিরাপদ ইউক্রেনে বিনিয়োগ করতে চায় আমেরিকার জনগণ। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী শান্তি এবং তাদের জনগণ ও সরকারের মধ্যে টেকসই অংশীদারিত্ব চায় যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/একেএ