সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার পাঠাগার দীর্ঘদিন থেকেই পরিত্যক্ত। পরিত্যক্ত পাঠাগারে কে আসে কে যায় তা দেখভাল করা হয় না। নেই কোনো সিসি ক্যামেরা। এত কিছুর পরেও এবার সেই পাঠাগারে সম্মেলনের আয়োজন করে শিবির।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে পাঠাগারের ভেতরে ব্যানার, ফেস্টুনসহ চেয়ার দিয়ে সাজানো হয় পুরো পাঠাগার। আমন্ত্রিত শিবিরের দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের দেয়া হয় ডায়েরি, আইডি কার্ডসহ বিভিন্ন ধরণের উপহার। এরপর সকাল ১০টা থেকে শিবিরের নেতাকর্মীরা ওই পাঠাগারে অর্ধশতাধিক শিবিরের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিলেও সেই খবরও জানা ছিল না মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। এবার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নিয়ে সিলেটে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
শিবিরের এমন সম্মেলনের খবর পেয়ে সিলেটে মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ২ শিবির নেতা ও সন্দেহভাজন আরও একজনসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি জানান, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খবর পেয়েই পুলিশ নিয়ে অভিযান শুরু করি। মাদ্রাসার পরিত্যক্ত পাঠাগারের কক্ষে সম্মেলনের আয়োজন দেখে হতবাক হয়েছি। সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার পরিত্যক্ত পাঠাগারে কিভাবে শিবিরের নেতাকর্মীরা সম্মেলন করে সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সাথে এসব বিষয়ে মাদ্রাসার প্রিন্সিপালসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথে পুলিশ কথা বলবে। এসময় পুলিশ পাঠাগারের কক্ষ থেকে ব্যানার, ডায়েরি, আইডি কার্ড ও দু’টি মোটরসাইকেল জব্দ করে।
এ ব্যাপারে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. মাহমুদ ইকবাল বলেন, মাদ্রাসার পরিত্যক্ত পাঠাগারে শিবিরের নেতাকর্মীদের সম্মেলন করার কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। তারা অনুমতি না নিয়েই দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছিল বলে আমাদের জানা ছিল না। পুলিশের অভিযানের পর বিষয়টি আমরা জানতে পারি।
শিবিরের নেতাকর্মীদের দাবি তারা অনুমতি নিয়েই সম্মেলনের আয়োজন করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। যদি তারা অনুমতি পেয়ে থাকে তাহলে আমাদের সেই প্রমাণ দিক। মুখের কথায় কোনো কিছু হয় না। তারা ঘটনা ঘটিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে আটক শিবির কর্মীরা হলেন, সিলেট শহরতলীর জালালাবাদ থানাধীন আটগাঁও গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে আমিনুর রহমান, দক্ষিণ সুরমা সিলামের আসাদ মিয়ার ছেলে শাহার আহমদ তানভির আহমদ নামের আরও এক যুবক। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট কোতোয়ালি থানার মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।
তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২ জন শিবির নেতাকে আটক করেছে। সেই সাথে সন্দেহজনক হিসেবে আরও এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এসময় একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। যতটুকু জেনেছি মাদ্রাসায় শিবিরের নেতাকর্মীদের নিয়ে সম্মেলন চলছিল। পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর