চট্টগ্রামে বিএনপির ডাকা অবরোধ কর্মসূচিতে দিনভর মাঠেই ছিল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ এবং অঙ্গ সংগঠনগুলো। বিক্ষোভ মিছিল, দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে দ্বিতীয় দিনেও রাজপথে সরব ছিল সরকার সমর্থক সংগঠনগুলো। তবে দলীয় কর্মসূচি এবং প্রশাসনের অবস্থানের পরও দুর্বৃত্তরা বাসে আগুন দিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল রাজপথে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার (০১ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা এবং কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সকালে বিএনপি-জামায়াতসহ স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি প্রতিরোধকল্পে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দারুল ফজল মার্কেট চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনাদ, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ হাসান মাহমুদ সমশের, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ফারুক আহমেদ, ইদ্রিস কাজেমী, আবুল হাশেম বাবুল, আশীষ ভট্টাচার্য্য, গোলাম মোহাম্মদ জুবায়ের, সলিমউল্লাহ বাচ্চু, ফজলে আজিজ বাবুল, রুহুল আমিন তপন প্রমুখ।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি যদি ২০১৪-১৫ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায় এবং আবার যদি জ্বালাও পোড়াও শুরু করে তাদেরকে অবশ্যই নিজেদের আগুনে পুড়ে আত্মহুতি দিতে হবে। তাদের বুঝতে হবে আওয়ামী লীগ বিজয়ী শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। আওয়ামী লীগের বিনাশ নেই। যারা বিনাশ করতে চেয়েছে তারাই বিনাশ হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবেই। যারা নির্বাচন বানচাল করার অপচেষ্টা চালাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকার, জনগণ এবং প্রশাসন অবশ্যই বাধ্য হবে। এক্ষেত্রে কাউকে তিল পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না। মীর্জা ফখরুল ও আমীর খসরুরা সরকার পতনের যে দিবা স্বপ্ন দেখেছিল এখন তা তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। তারা বিদেশি প্রভুর আর্শীবাদ প্রাপ্তির জন্য যে ভিক্ষার থালা নিয়ে ভিনদেশী দূতাবাসে দর্ণা দিলেও সেই ভিক্ষার থালা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যাত হবে।
এদিকে, ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখা বুধবার সকালে মহানগর আওয়ামী লীগের দারুল ফজল মার্কেটের সংগঠন কার্যালয়ে মিছিল সহকারে যোগ দেয় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ। এরপর সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। তাছাড়া সকাল থেকে বিকালে নগরের ছয়টি নির্দিষ্ট স্পটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। একই সঙ্গে নগরের ১২টি থানা এলাকায় নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। তাছাড়া, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের নেতৃত্ব ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নগরীর ৬টি পয়েন্ট অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, আমরা অরাজকতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। এ লক্ষ্যে নগরের দারুল ফজল, সল্টগোলা, বহদ্দারহাট, অক্সিজেন মোড়, নতুন ব্রিজ ও একে খান মোড়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অবস্থা নিয়েছি। তাছাড়া, শান্তিপূর্ণভাবে খন্ড খন্ড মিছিলও বের করা হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। কোনো দুষ্কৃতিকারী যদি গাড়িতে আগুন দেয় আমরা তা প্রতিহত করব। আর কোনো যাত্রিবাহি গাড়িতে আগুন দিতে দেব না।
অন্যদিকে, নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে মিছিল সহকারে যোগদিয়েছে নগর যুবলীগ। নগর যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল হক সুমন ও সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলমের নেতত্বে একটি মিছিল শান্তি সমাবেশে যোগ দেয়। তাছাড়া, নগর যুবলীগের উদ্যোগে বহদ্দার হাট মোড়েও একটি সবাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ