নিখোঁজের পর ১৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেল। কিন্তু ছয় মাস বয়সী সেহলিজ নামের শিশুটির এখনও খোঁজ মিলেনি। আজ শনিবার সকাল থেকে নিখোঁজ শিশুটির উদ্ধারে নৌ বাহিনীর একটি টিম কাজ শুরু করেছে। তবে সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো খোঁজ মিলেনি।
নিখোঁজ শিশুটির মায়ের নাম সালমা বেগম। এটি তাঁর প্রথম সন্তান। তারা রাতে কাপাসগোলায় এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। ফেরার পথে অটোরিকশা ঘোরাতে গিয়ে সেটি খালের মধ্যে পড়ে যায়। পড়ে যাওয়া খালটির নাম ‘হিজড়া খাল’।
শিশুটির পরিবারের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কেবলই বাড়ছে। তবে সবার মধ্যে তীব্র ক্ষোভ, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও দায়িত্বশীল সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভাষা দেখা যায়।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে নালা ও খালে পড়ে পানির স্রোতে মানুষ তলিয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা নিয়মিত হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোারেশন (চসিক) নগরের খাল-নালাগুলো পরিস্কার করে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরে বেশ কিছুক্ষণ মুসলধারে বৃষ্টি হলে খাল-নালায় পানির স্রোত তৈরি হয়। চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কারণে খালের পাশের নিরাপত্তাবেষ্টনী খুলে রাখা হয়েছিল।
জানা যায়, গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নগরের চকবাজার থানাধীন কাপাসগোলা এলাকার হিজরা খালে ছয় মাস বয়সী এক শিশু, শিশুর মাসহ তিনজন যাত্রী ও একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা পড়ে যায়। এসময় খালে বৃষ্টির পানির স্রোত ছিল। ঘটনার পর রাত ১০টার দিকে অনতিদুরের খাল থেকে স্ক্যাভেটারের সহায়তায় মা ও এক নারী যাত্রীকে উদ্ধার করা গেলেও শিশুটি পানির স্রোতে তলিয়ে যায়। প্রথম দিকে ককসিটসহ বর্জ্য অপসারণ কাজে যোগ দেন চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মীরা। এরপর ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শুরু করে। শুক্রবার রাত ১২টায় প্রাথমিকভাবে উদ্ধার অভিযান শেষ করা হয়। আজ শনিবার সকাল থেকে আবারও দ্বিতীয়বারের মত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে নৌ বাহিনী। তবে এখনও খোঁজ মিলেনি। ঘটনার পরপরই অটোরিকশাচালক পালিয়ে যান।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থলে বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি দল ও চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মীরা কাজ করছেন। রিকশাযাত্রী মায়ের কোল থেকে ছয় মাসের শিশু নালায় ছিটকে পড়ে নিখোঁজ হওয়াটা দুঃখজনক। তিনি বলেন, এটি হিজরা খাল। চসিক নিয়মিত খাল-নালা পরিস্কার করে। কয়েকদিন আগেও খালটি পরিস্কার করা হয়। কিন্তু আশপাশের ভবন থেকে সারাক্ষণ ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। নিজেদের সচেতন হতে হবে। শিগগির এ জায়গায় রেলিং দেওয়া হবে।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারি পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, গত শুক্রবার রাত ১২টায় প্রথম দিনের উদ্ধার তৎপরতা শেষ করা হয়। আজ শনিবার সকাল থেকে নৌ বাহিনীর একটি টিম উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। আমাদের টিমও উপস্থিত থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন