সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক হালদা নদী এখন অভিভাবকহীন। ফলে এটি এখন বহুমাত্রিক সমস্যায় আক্রান্ত। অভিভাবকহীন এই হালদা নদী এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। ক্যান্সার আক্রান্ত একজন রোগীর যেমন চোখের সামনে মৃত্যু দেখতে হয়, তেমনি আমরা এখন ক্যান্সার আক্রান্ত হালদা নদীর মৃত্যু চেয়ে চেয়ে দেখছি।
‘পার্টনারশিপ ফর কনজারভেশন অফ হালদা রিভার ইকোসিস্টেম’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমাবার দুপুরে নগরের রেডিসান ব্লু হলে বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার, ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম। হালদা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল কিবরিয়া এবং সিএনআরএস এর নির্বাহী পরিচালক ড. মুখলেছুর রহমান। প্যানেল আলোচক ছিলেন সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালক নাসিরুদ্দিন মো. হুমায়ুন, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মাসুদ করিম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপির প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট আরিফ এম ফয়সাল।
প্রধান অতিথি দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রে মাছ ছাড়ার জন্য বরাদ্দ থাকে এক লক্ষ টাকা। আর এই নদী নিয়ে স্টাডির জন্য বরাদ্দ থাকে দুই কোটি টাকা। অথচ একটি ব্যাক্তিগত পুকুরে মাছ ছাড়ার জন্যও এক লাখ থেকে বেশি টাকা খরচ করা হয়। এটি অত্যন্ত দুখের বিষয়। তবে বাস্তবতার নিরিখেই বহুমাত্রিক এই নদী রক্ষায় আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ যে যাই বলুক, এই নদীতে মাছ প্রজনন করতেই হবে, ডিম আহরণ করতে হবে, নদীর পাড়ের মানুষদের বাঁচাতে হবে।
এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের কী দরকার? হালদা নদীর মাছ, নাকি নদী সংশ্লিষ্ট জমির ধান? নাকি পানি? অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আগাতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের বালি উত্তোলন জরুরি। কিন্তু তা করতে হবে নির্ধারিত পয়েন্ট থেকে।
তিনি বলেন, হালদা নদী নিয়ে আইন থাকতে হবে। আইন করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ইঞ্জিন বোট চলা যাবে না, দুষণ করা যাবে না, আশপাশের বর্জ্য ফেলা যাবে না, কীটনাশকের পানি আসতে দেওয়া হবে না। এ সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিলে একদিন হালদা নদী আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে যাবে। তখন আজকের মত ‘মিটিং সিটিং ইটিং’ এর কোনো কাজে আসবে না।