চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ১০ বীরঙ্গনাসহ ১৫০ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননাপত্র, স্মারক ও ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছে।
সোমবার দুপুরে নগরের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা’ অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবুল হোসেন।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও সাবিহা মুসা, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, রাশিয়ার কনসাল জেনারেল মি. ওলেগ পি, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক মিয়া, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, জেলা কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটি সমৃদ্ধ তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর মত ‘সবেধন নীলমণি’ একটি শহীদ মিনার আছে। ভাষা শহীদদের এই স্মৃতির মিনারে আমরা স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসেও যাই। তাই চট্টগ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ দারকার। এটি করতে হবে প্রাইম লোকেশনে। এক্ষেত্রে পুরোনো সার্কিট হাউসের সামনের শিশুপার্কটি যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি। ওই জায়গাটি মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মৃতি তিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান। শিশুপার্কের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হবে। এরপর আর মেয়াদ বাড়ানো হবে না। এখানেই স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে।
তিনি বলেন, খেতাবপ্রাপ্ত, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা পৌরকরমুক্ত। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা নিজের বাসার ১ হাজার বর্গফুট পর্যন্ত করমুক্ত। হতদরিদ্র ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা করের আওতামুক্ত। এটি তাদের প্রতি একটি সম্মান। কিন্তু নগরীর উন্নয়নের জন্য নাগরিকদের পৌরকর দিতে হবে। সক্ষম নাগরিকদের পৌরকর দেওয়া দেশপ্রেম ও নৈতিকতার অংশ।
নগর উন্নয়ন প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, ইতিমধ্যে চসিকের ৭১৬ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে। ২১০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তাছাড়া ৭০০ কোটি টাকার বেশি বেশ কিছু প্রকল্প তিন মাসের মধ্যে অনুমোদন পাবে বলে আশা করি।
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেখিয়ে মেয়র বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি তৈরির সয়েল টেস্ট, ড্রয়িং ও ডিজাইন চূড়ান্ত হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এর ভিত্তি স্থাপন করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের প্রতি সচেতন ও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের পরিবারের সদস্যরা কে কোন মতাদর্শে বিশ্বাসী, কাদের সঙ্গে মিশছে এসব নজর রাখতে হবে। কোটার সুযোগে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না এমন অনেকে সরকারি চাকরিতে জায়গা করে নিচ্ছে। তারা ক্রমে উঁচু পদে চলে যাবে। এক্ষেত্রে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। সন্তান ও পোষ্যরা যাতে বিপথগামী না হয় সে জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দায়িত্ব নিতে হবে। অনৈতিক, অসুন্দর ও অসামাজিক কার্যক্রম থেকে পরিবারের সদস্যদের দূরে রাখতে হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক প্রজন্মকে দ্রুত গ্রাস করছে।